আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ্। বাংলাদেশ সম্পর্কে জানুন। এখানে রয়েছে ইসলামী বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাণ্ডার যা প্রতিটি মুসলমানের জন্য জানা অত্যাবশ্যক।***
যে কোন রোগের চিকিৎসা সেবা সহ অনলাইনে ফ্রি ডাক্তারের সাথে পরামর্শের সুযোগ ***
ডাঃ আহমদ ইমতিয়াজ ডি.এইচ.এম.এস, বি.এইচ.এম.সি (ঢাকা) মোবাইল - 01914440430 ই-মেইলঃ drahmadimtiaj@gmail.com ***

পবিত্র মীলাদ শরীফ

কালামুল্লাহ শরীফে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
يَااَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مّـِنْ رَّبّـِكُمْ وَشِفَاء لّـِمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـِمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
উচ্চারণঃ ইয়া আইয়্যুহানাছু ক’দ জা- আতকুম মাওয়িজাতুম মীর রব্বিকুম ওয়া শিফা- উল লিমা ফিসসূদুর, ওয়া হুদাও ওয়া রহমাতুল্লিল মু’মিনীন। কুল বি  ফাদ্বলিল্লাহি অবি রহমাতিহি ফাবি যালিকা ফাল ইয়াফ রাহু, ওয়া খয়রুম মিম্মা ইয়াজমা্’উন।

অর্থ: তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের আরোগ্যদানকারী, হিদায়াত দানকারী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রহমতস্বরূপ তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন।
হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে ফযল, করম ও রহমত স্বরূপ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা, তাদের সারা জীবনের সমস্ত আমল অপেক্ষা উত্তম এবং শ্রেষ্ঠ। সুবাহানাল্লাহ। (সূরা ইউনূস, আয়াত: ৫৭- ৫৮)

পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করার সহীহ তরতীব বা নিয়মঃ

ﺍﻋﻮﺫ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺍﻟﺮﺟﻴﻢ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
ﻟﻘﺪ ﺟﺎﺀﻛﻢ ﺭﺳﻮﻝ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﻔﺴﻜﻢ ﻋﺰﻳﺰ ﻋﻠﻴﻪ ﻣﺎ ﻋﻨﺘﻢ
ﺣﺮﻳﺺ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺑﺎﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺭﺀﻭﻑ ﺭﺣﻴﻢ . ﻓﺎﻥ ﺗﻮﻟﻮﺍ
ﻓﻘﻞ ﺣﺴﺒﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻪ ﺍﻻ ﻫﻮ © ﻋﻠﻴﻪ ﺗﻮﻛﻠﺖ © ﻭﻫﻮ
ﺭﺏ ﺍﻟﻌﺮﺵ ﺍﻟﻌﻈﻴﻢ.
ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﺤﻤﺪ ﺍﺑﺎ ﺍﺣﺪ ﻣﻦ ﺭﺟﺎﻟﻜﻢ ﻭﻟﻜﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﺧﺎﺗﻢ ﺍﻟﻨﺒﻴﻴﻦ © ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻜﻞ ﺷﻲﺀ ﻋﻠﻴﻤﺎ.
ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻣﺎﻝﺀﻛﺘﻪ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺒﻲ © ﻳﺎ ﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﺬﻳﻦ
ﺍﻣﻨﻮﺍ ﺻﻠﻮﺍ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻤﻮﺍ ﺗﺴﻠﻴﻤﺎ .

উচ্চারণ:
আউযু বিল্লাহিমিনাশ শায়তানির রযীম। বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম। লাকাদ জা’আকুম রসূলুম মিন আনফুসিকুম আযীযুন আলাইহি মা আনিত্তুম হারীছুন আলাইকুম বিল মু‘মিনিনা রউফুর রহীম। ফাইন তাওয়াল্লাও ফাক্বুলহাসবি আল্লাহু লা’ ইলাহা ইল্লাহু। আলাইহি তাওয়াককালতু , ওহুয়া রব্বুল আরশীল আযীম। (সূরা তাওবা, আয়াত শরীফ ১২৮,১২৯)
মা কানা  মুহাম্মাদুন আবা আহাদীম মির রীজালিকুম ওলাকির রসূল্লাল্লাহি ওয়া খতামান নাব্যিয়িন। ওয়া কা’নাল্লাহু বিকুল্লি শাইয়্যিন আলীমা। ( সূরা আহযাব ৪০) ইন্নাল্লাহা ওয়া মালা’ইকাতাহু ইয়ুছল্লুনা আলান নাব্যি। ইয়া’আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানু ছল্লু আলাইহি ওয়া সাল্লীমু তাসলীমা।
(সূরা আহযাব ৫৬)

অতঃপর মুহব্বতের সাথে নিম্নোক্ত দরূদ শরীফ পাঠ করুন দুই বার পাঠ করূন।
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺻﻞ ﻋﻠﻲ ﺳﻴﺪﻧﺎ ﻣﻮﻟﻨﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻝ ﺳﻴﺪﻧﺎ ﻣﻮﻟﻨﺎ ﺣﺒﻴﺐ ﺍﻟﻠﻪ

উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ছল্লীআলা’ সাইয়্যিদিনা মাওলানা রসূলিল্লাহ।
ওয়াআ’লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবিবিল্লাহ।
এবং দরূদ শরীফের সাথে মিলিয়ে যে কোন ক্বাছীদা শরীফ পাঠ করুন

শুকরিয়া জানাই হে নবীজী উম্মত আপনার হয়েছি
বেশুমার শুকরিয়া হে মামদুজী সালিক আপনার হয়েছি
তাইতো আজ এই বরকতময় মাজলিসে মীলাদ শরীফ পড়িতেছি।

আল্লাহুম্মা ছল্লীআলা’ সাইয়্যিদিনা মাওলানা রসূলিল্লাহ।
ওয়াআ’লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবিবিল্লাহ।


ক্বুল কা’য়িনাত সবাই বলেন,
আজকে আমাদের ঈদের দিন।
এ ধরাতে তাশরীফ আনলেন রহমাতুল্লিল আলামীন।

আল্লাহুম্মা ছল্লীআলা’ সাইয়্যিদিনা মাওলানা রসূলিল্লাহ।
ওয়াআ’লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবিবিল্লাহ।

এমন নবীজি উনার উম্মত আমরা,
যে নবীজী উনার নাই কোন তুলনা।
যিনার প্রতি ছলাত পড়েন স্বয়ং পাকে রব্বুনা।

আল্লাহুম্মা ছল্লীআলা’ সাইয়্যিদিনা মাওলানা রসূলিল্লাহ।
ওয়াআ’লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবিবিল্লাহ।

আকাশেতে ফেরেশতারা কাতারে কাতারে খাঁড়া,
পড়ছেন উনার ছল্লু আলা মুহম্মদিয়া রাসুলিল্লাহ।

আল্লাহুম্মা ছল্লীআলা’ সাইয়্যিদিনা মাওলানা রসূলিল্লাহ।
ওয়াআ’লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবিবিল্লাহ।

কাছে থাকি দূরে থাকি উম্মত আমরা আপনার
সুপারিসের আশা রাখি কঠিন হাশরের মাঝার।

আল্লাহুম্মা ছল্লীআলা’ সাইয়্যিদিনা মাওলানা রসূলিল্লাহ।
ওয়াআ’লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবিবিল্লাহ।

অতঃপর নিম্নোক্ত “তাওয়াল্লুদ শরীফ” পাঠ করতে হবে।

ﻧﺤﻤﺪ ﻧﺼﻠﻲ ﻧﺴﻠﻢ ﻋﻠﻲ ﺭﺳﻮﻟﻪ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ ﺍﻟﻪ
ﻭﺍﺻﺤﺎﺑﻪ ﺍﺟﻤﻌﻴﻦ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
ﻭﻟﻤﺎ ﺗﻢ ﻣﻦ ﺣﻤﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺳﺘﺔ ﺍﺷﻬﺮ
ﻋﻠﻲ ﻣﺸﻬﻮﺭ ﺍﻻﻗﻮﺍﻝ ﺍﻟﻤﺮﻭﻳﺔ، ﺗﻮﻓﻲ ﺑﻠﻤﺪﻳﻨﺔ ﺍﻟﻤﻨﻮﺭﺓ
ﺍﻟﺸﺮﻳﻔﺔ ﺣﻀﺮﺓ ﺫﺑﻴﺢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﻜﺮﻡ ﺍﺑﻮﻩ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ، ﻭﻛﺎﻥ ﻗﺪ ﺍﺟﺘﺎﺯ ﺑﺎﺧﻮﺍﻟﻪ ﺑﻨﻲ ﻋﺪﻱ ﻣﻦ ﺍﻟﻄﺎﺀﻓﺔ
ﺍﻟﻨﺠﺎﺭﻳﺔ، ﻭﻣﻜﺚ ﻓﻴﻬﻢ ﺷﻬﺮﺍ ﺳﻘﻴﻤﺎ ﻳﻌﺎﻧﻮﻥ ﺳﻘﻤﻪ
ﺷﻜﻮﺍﻩ ، ﻭﻟﻤﺎ ﺗﻢ ﻣﻦ ﺣﻤﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺳﻠﻢ
ﻋﻠﻲ ﺍﻟﺮﺍﺟﺢ ﺗﺴﻌﺔ ﺍﺷﻬﺮ ﻗﻤﺮﻳﺔ ، ﻭﺍﻥ ﻟﻠﺰﻣﺎﻥ ﺍﻥ
ﻳﻨﺠﻠﻲ ﻋﻨﻪ ﺻﺪﺍﻩ ، ﺣﻀﺮﺕ
ﺳﻴﺪﺓ ﻧﺴﺎﺀ ﺍﻟﻌﺎﻟﻤﻴﻦ ﺍﻣﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺳﻠﻢ ﻟﻴﻠﺔ
ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺣﻀﺮﺓ ﺍﻡ ﺍﻟﺒﺸﺮ ﻋﻠﻴﺤﻬﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺣﻀﺮﺓ ﺍﻡ
ﺫﺑﻴﺢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻻﻭﻟﻲ ﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ ﻋﻠﻴﻬﻤﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺣﻀﺮﺓ
ﺭﺑﺔ ﻛﻠﻴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺣﻀﺮﺓ ﺍﻡ ﺭﻭﺡ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻓﻲ ﻧﺴﻮﺓ ﻣﻦ ﺍﻟﺤﻈﻴﺮﺓ ﺍﻟﻘﺪﺳﻴﺔ ،
ﻭﺍﺧﺬﻫﺎ ﺍﻟﻤﺨﺎﺽ ، ﻓﻮﻟﺪﺗﻪ ﺳﻴﺪ ﺍﻟﻤﺮﺳﻠﻴﻦ ﺍﻣﺎﻡ
ﺍﻟﻤﺮﺳﻠﻴﻦ ﺧﺎﺗﻢ ﺍﻟﻨﺒﻴﻦ ﺍﻟﻨﻮﺭ ﺍﻟﻤﺠﺴﻢ ﺣﺒﻴﺐ ﺍﻟﻠﻪ
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺳﻠﻢ ﻧﻮﺭﺍ ﻳﺘﻼ ﻻﺳﻨﺎﻩ

উচ্চারন :
নাহমাদুহূ ওয়া নুছল্লী আলা রসূলিহিল কারীম
ওয়া আলা আলিহী ওয়া আছহাবিহী আজমাঈন।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম।
ওয়া লাম্মা তাম্মা মিন হামলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা সিত্তাতু
আশহূরিন আলা মাশহুরিল আক্বওয়ালিল মারবিয়্যাহ। তুউফফিয়া বিল মাদীনাতিল
মুনাওওয়ারাতিশ শরীফাতি হাদ্বারাত যাবিহুল্লাহিল মুকাররম আবুহু ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ওয়া কানা কাদিজতাযা বি আখওয়ালিহী বানী আদিয়্যিম
মিনাত ত্বয়িফাতিন নাজ্জারিয়্যাহ। ওয়া মাকাছা ফীহিম শাহরাং সাক্বীমাইঁ
ইউয়ানূনা সুক্বমাহূ ওয়া শাকওয়াহ।
ওয়া লাম্মা তাম্মা মিন হামলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলার
রাজিহি তিসয়াতু আশহূরিং ক্বামারিয়্যাহ। ওয়া আনা লিয যামানি আইঁ ইয়াংজালিয়া আনহু ছদাহ। হাদ্বারাত সাইয়্যিদাতা নিসায়িল আলামীনা উম্মাহূ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা লাইলাতা মাওলিদিহী হাদ্বারাত উম্মুল বাশারি আলাইহাস সালাম ওয়া হাদ্বারাত উম্মু যাবীহিল্লাহিল উলা ওয়াছ ছানিয়াতু আলাইহাস সালাম ওয়া হাদ্বারাত রব্বাতু
কালীমিল্লাহি আলাইহাস সালাম ওয়া হাদ্বরাত উম্মু রূহিল্লাহি আলাইহাস সালাম ফী নিসওয়াতিম মিনাল হাযীরাতিল কুদসিয়্যাহ। ওয়া আখাযাহাল মাখাদ্ব ফাওয়ালাদাতহু সাইয়্যিদাল মুরসালীন ইমামাল মুরসালীন খাতামান নাবিয়্যিন ওয়ান নূরাল মুজাসসাম হাবীবাল্লহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরাইঁ ইয়াতালা’লা উসিনাহ।

অতঃপর সকলেই ক্বিয়াম শরীফ করবেন বা দাঁড়িয়ে মুহব্বতের সাথে নিম্নোক্ত
ভাবে সালাম পেশ করবেন এবং প্রতিবার সালমের সাথে একটি করে ক্বাছীদা শরীফ
পাঠ করতে হবে।

ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻲ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ + ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﺳﻠﻢ
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻲ ﺣﺒﻴﺐ ﺍﻟﻠﻪ + ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺳﻠﻢ
ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ + ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻳﺎ ﻧﺒﻲ
ﺍﻟﻠﻪ
ﺍﻟﺴﻼﺍﻡ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻳﺎ ﺣﺒﻴﺐ ﺍﻟﻠﻪ + ﺻﻠﻮﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻜﻢ

উচ্চারণ :
ছল্লাল্লাহু আলা রসূলিল্লাহ, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।
ছল্লাল্লাহু আলা হাবীবিল্লাহ, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া রসূলাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া নাবিইয়্যাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া হাবীবাল্লাহ।
ছলাওয়া দুল্লা ওয়ালাইকুম।

দেখেছি কুরআন শরীফের আয়াতে
দেখেছি হাদীস শরীফের পাতাতে
দেখি নাই একবার দু নয়নে
দেখা দিন আপনায় স্বপনে ও জাগরণে।

আসসালামু আলাইকুম ইয়া রসূলাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া নাবিইয়্যাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া হাবীবাল্লাহ।
ছলাওয়া দুল্লা ওয়ালাইকুম।


নবীজী আপনি মদীনা হইতে সবকিছুই পারেন দেখিতে
মোদের লাশ কবরে রাখিলে, দিয়েন ঠাঁই পাক ক্বদমেতে।

আসসালামু আলাইকুম ইয়া রসূলাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া নাবিইয়্যাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া হাবীবাল্লাহ।
ছলাওয়া দুল্লা ওয়ালাইকুম।

ইয়া রসূলাল্লাহ ! ইয়া হাবীবাল্লাহ !
ছলাত ও সালাম নিন মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার।
দরূদ ও সালাম নিন হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের।
দরূদ, না’ত ও সালাম নিন এই উম্মাহর।
উম্মত যে আমরা আপনার !

আসসালামু আলাইকুম ইয়া রসূলাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া নাবিইয়্যাল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া হাবীবাল্লাহ।
ছলাওয়া দুল্লা ওয়ালাইকুম।


এরপর বসে সকলে পাঠ করবেন
বালাগাল উলা বিকামালিহি, কাশাফাদদুজা বিজামালিহি।
হাসুনাত জামিইউ খিছলীহি, ছল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি।
সাল্লিমু ইয়া ক্বাওমুবাল ছল্লু আ’লা ছদরীল আমীন।
মুছত্বফা মা জা’য়িল্লা রহমাতাল্লিল আ’লামীন।

অতঃপর ছওয়াব রেসানী করে দোয়া মুনাজাত করতে হবে।
ছওয়াব রেসানী করার নিয়ম-
১) ইস্তিগফার শরীফ তিনবার
(আসতাগফিরুল্লাহা রব্বি মিন কুল্লি জাম্বিউঁ ওয়াতুবু ইলাইহি ……)
২) আউযুবিল্লাহ শরীফ ও বিসমিল্লাহ শরীফ সহ সূরা ফাতিহা শরীফ একবার।
৩) বিসমিল্লাহ শরীফ সহ সূরা ইখলাছ শরীফ(কুল হু ওয়াল্লাহ) তিনবার।
৪) দরূদ শরীফ পাঁচ বার –


আল্লাহুম্মা ছল্লী আলা সাইয়্যিদিনা নাবিয়্যিনা হাবীবিনা শাফিয়্যিনা মাওলানা আন নাবীয়্যুল উম্মিয়্যি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লিম।

অতপর হাত উঠিয়ে অত্যন্ত আদবের সাথে মুহব্বতের সাথে দৃঢ় চিত্তে নূরে মুজাসসাম,  হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উসীলা দিয়ে দোয়া করতে হবে। এবং দোয়ার শুরুতে, মাঝে এবং শেষে অবশ্যই দরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ

মীলাদ শব্দের অর্থ:মীলাদ (ميلاد), মাওলিদ (مولد) এবং মাওলূদ (مولود) এ তিনটিশব্দের আভিধানিক অর্থ যথাক্রমে জন্মদিন, জন্মকাল ও জন্মস্থান প্রভৃতি।*সুপ্রসিদ্ধ ‘আল মুনজিদ’ নামক আরবি অভিধানের ৯১৮ পৃষ্ঠায় রয়েছে, الميلاد – وقت الولادة অর্থাৎ মীলাদ অর্থ- জন্মসময়।المولد – موضع الولادة او وقتها মাওলিদ অর্থ- জন্মস্থান অথবা জন্মসময়। المولود – الولد الصغيرমাওলূদ অর্থ- ছোট শিশু।*অনুরূপ ‘মিসবাহুল লুগাত’ এর ৯৬৬ পৃষ্ঠায় রয়েছে, ‘মীলাদ’ অর্থ- জন্মসময়। ‘মাওলিদ’ অর্থ- জন্মস্থান অথবা জন্মসময়। ‘মাওলূদ’ অর্থ- ছোট শিশু।*‘মীলাদ’ শরীফ অর্থ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খতামুন নাবীয়্যিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উদ্‌যাপন। তাছাড়া আল্ মিসবাহুল মুনীর, ফিরুজুল লুগাত, গিয়াসুল লুগাত, লুগাতে সুরাহ, প্রভৃতি আরবি অভিধানে ‘মীলাদ’ শব্দের উপরোক্ত অর্থই উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং মীলাদুন নবী, মাওলিদুন নবী ও মাওলূদুন নবী মুবারক শব্দগুলির অর্থ হল- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খতামুন নাবীয়্যিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার মুবারক বিলাদত শরীফ তথা সাইয়্যিদুল আই’য়াদ শরীফ।

দ্বীন ইসলাম উনার পরিভাষায়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খতামুন নাবীয়্যিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পেশ করা, উনার ছানা-ছিফত করা, উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ সংক্রান্ত ওয়াকিয়া মুবারক ও তদসম্বলিত ঘটনাবলী আলোচনা করা এবং এ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানই ‘মীলাদুন নবী’, সংক্ষেপে ‘মীলাদ শরীফ’ নামে অভিহিত।

মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সংক্ষেপে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নার ছানা-ছিফত ও বিলাদত শরীফ সম্পর্কে আলোচনা করা এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা।

এক কথায় মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ বলতে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত, তা’রীফ, প্রশংসা, উনার মু’জিযা বর্ণনা, বিলাদত শরীফ-এর আলোচনা, না’ত, শে’র, কাছীদা শরীফ পাঠ ও উনার প্রতি ছলাত ও সালাম প্রেরণ করা ইত্যাদি পাঠ করা হয়।

যেমন- মীলাদ শরীফ-এর প্রথমেই কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়।

অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ছলাত পাঠ করা হয়। কারণ ছলাত পাঠ করা আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদেরই নির্দেশ।

তাছাড়া আমরা যেভাবে মজলিস করে মীলাদ শরীফ-এর মাহফিল করে থাকি তা খোদ আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকেও ‘মীলাদ শরীফ-এর প্রমান রয়েছে। শুধু তাই নয়, হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা স্বয়ং নিজেরাই “মীলাদ শরীফ”-এর তাকীদ করেছেন ও ফযীলত বর্ণনা করেছেন।

মীলাদ শরীফ পাঠ করার ফজিলত

জগৎবিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা শিহাবুদ্দীন আহমদ ইবনে হাজার মক্কী হায়তামী শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্বখ্যাত ‘আন নিয়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম’ নামক কিতাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করার ফযিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে কয়েকখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও জগৎবিখ্যাত ইমামদের মতামত বর্ণনা করেছেন।নিম্নে কতিপয় উল্লেখ করা হলো।

***সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম বলেন,قال ابوبكر الصديق رضى الله عنه من انفق درهما على قراءة مولد النبى صلی الله عليه وسلم كان رفيق فى الجنةঅর্থ: যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ উপলক্ষে এক দিরহাম খরচ করবে সে বেহেশতে আমার সঙ্গে বন্ধু হয়ে থাকবে।

***সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ফারুক্ব ইবনে খত্ত্বাব আলাইহিস সালাম বলেন-قال عمر رضى الله عنه من عظم مولد النبى صلى الله عليه وسلم فقد احيا اللاسلامঅর্থ: যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফকে সম্মান করলো, নিশ্চয়ই সে পবিত্র দ্বীন ইসলামকে জিন্দা করল।

***সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম বলেন-قال عثمان رضى الله عنه من انفق درهما على قراءة مولد النبى صلى الله عليه وسلم فكانما شهد غزوة بدر و حنينঅর্থ: যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ উপলক্ষে এক দিরহাম খরচ করল, সে যেন বদর ও হুনাইনের যুদ্ধে শরিক হল।

***সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম বলেন-قال على رضى الله عنه وكرم الله وجهه من عظم مولد النبى صلىالله عليه وسلم وكان سببا لقراءته لايخرج من الدنيا الا بالايمان ويدخل الجنة بغير حسابঅর্থ: যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার সম্মান করল,তার মৃত্যু পবিত্র ঈমানের সাথে হবে। অর্থাৎ সে পবিত্র ঈমানদার হিসেবে মারা যাবে এবং বিনা হিসেবে বেহেশতে প্রবেশ করবে।

”***-উস্তাযুল উলামা আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসেদেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘মাসাবাতা মিনাস সুন্নাহ’ উনার ৭৯ পৃষ্ঠায়,-আল্লামা আব্দুল বাকি রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘জারকানী শরীফ’ উনার ১ম খন্ডের ১৩৯ পৃষ্ঠায়,-বুখারী শরীফ উনার প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইমাম কুছতালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া’ নামক কিতাবের ১ম খন্ডের ২৭ পৃষ্ঠায়,-আল্লামা আলী বিন বুরহানুদ্দীন হলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তদীয় ‘সিরাতে হলবিয়া’ নামক কিতাবের ১ম জিলদের ৮৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন-لازال اهل الاسلام يحتفلون بشهر مولوده عليه السلام ويعملون الولائم ويتصدقون فى لياليه بانواع الصدقات ويظهرون السرور ويزيدون فى المبرات ويعتون بقراءة بمولده الكريم ويظهر عليهم من بركاته كل فضل عميمومما جرب من خواصه انه امان فى ذلك العام وبشرى عاجلة بنيل البغية والمرام فرحم الله امرا اتخذ ليالى شهر مولده المبارك اعيادا ليكون اشد علة على من فى قلبه مرض و عناد
অর্থ: “মুসলমানগণ সর্বদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী মাস তথা জন্মমাসে মাহফিল করে থাকেন। সে উপলক্ষ্যে আনন্দ ভোজাদি প্রস্তুত করে থাকেন এবং ঐ রাতসমূহে বিভিন্ন প্রকারের দান খয়রাত ও আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন, অধিক পরিমাণে নেক কাজ করে থাকেন এবং মীলাদ শরীফ পাঠ করার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। যার বরকতে তাদের উপর বিভিন্ন প্রকারের কল্যাণ সাধিত হয়ে থাকে।মীলাদ শরীফ পাঠের পরীক্ষিত বিশেষত্ব এই যে, এর বদৌলতে এক বছর পর্যন্ত নিরাপদ ও শান্তিতে থাকবে। নেকমাকসুদ ও প্রয়োজনাদি শীঘ্রই পূরণ হবে। আল্লাহ তায়ালা ঐ ব্যক্তির উপর অফুরন্ত রহমত বর্ষণ করবেন, যে ব্যক্তি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার জন্মমাসের রাত্রিকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এ ঈদ শক্ত মুসিবত হয়ে দাঁড়ায় ঐ ব্যক্তির জন্য যার ক্বলবে ব্যাধি রয়েছে।”

***আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তদীয়রচিত ‘মাওরিদুর রাবী’ নামক কিতাবে লিখেছেন-لازال اهل الاسلام يحتفلون فى كل سنة جديدة ويعتون بقراءة مولده الكريم ويظهر عليهم من بركاته كل فضل عميم

অর্থ: “মুসলমানগণ প্রতি নব বৎসরে মাহফিল করে থাকেন, এবং মীলাদ শরীফ পাঠ করার ব্যাপারে অতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। মীলাদ শরীফ পাঠের বরকতে তাদের উপর অনেক প্রকারের কল্যাণ সাধিত হয়।”তিনি (মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি) এ কিতাবে এ প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে বলেন- “নূরনবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার মুবারক আগমণের কারণে মাস সমূহের মধ্যে রবিউল আউয়াল মাসের ফযিলত ও মর্তবা খুবই বেশি। সরকারে কায়িনাত হন রবি অর্থাৎ বসন্তকাল সদৃশ। তিনি বসন্তকালীন মাসসমূহের প্রথম মাসে বসন্ত মাওসুমে রবি অর্থাৎ বসন্তকালে ভুমিষ্ট হয়েছেন। তিনি সমুজ্জ্বল জ্যোতি অপেক্ষা সমধিক আলোর চেয়েও সর্বাধিক জ্যোতির্ময়।”

***ছহীহ মুসলিম শরীফ উনার ১ম জিলদের ৩৬৮ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে, হযরত আবূ কাতাদা আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন
-سئل عن صوم الاثنين قال ذاك يوم ولدت فيه ويوم بعثت او انزل على فيه

অর্থ: “রাসূলে আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সোমবার শরীফে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেন, সোমবার শরীফে তো আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং সোমবার শরীফে-ই আমার প্রতি সর্বপ্রথম ওহী নাযিল করা হয়েছে।”এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে বুঝা গেল, রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার শরীফে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং এই সোমবার শরীফের বরকতে বৎসরের ৫২টি সোমবার শরীফ ফযিলত ও বরকতময় হয়ে গিয়েছে, এবং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার শরীফে রোজা পালন করার অনুমতি ও উৎসাহ প্রদান করলেন।

***উপরন্তু ‘তাফসীরে রূহুল বয়ান’ নামক কিতাবের নবম জিলদের ৫৬ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে, হিজরী নবম শতকের মুজাদ্দিদ আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহিআলাইহি বলেন-
يستحب لنا اظهار الشكر لمولده عليه السلام

অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ উনার আলোচনা করে শোকর আদায় করা আমাদের জন্য মুস্তাহাব।

মীলাদ শরীফ একটি সুন্নতি আমল ! প্রতিটা যুগেই মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফ এর আমল ছিল আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ্।

পবিত্র মক্কাতুল মুয়াজ্জামা এবং পবিত্র মদীনাতুল মুনাওয়ারা শরীফাঈন উনাদের সম্মানিত ইমাম   মুফতী সাহেব উনাদের কওল শরীফ



) পবিত্র মক্কা শরীফ এর হানাফী মাযহাব এর মুফতী , মাওলানা শায়খ জামাল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
মীলাদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠান করা হচ্ছে সারা বছর ব্যাপী শান্তি নিরাপত্তায় থাকা এবং মকসুদ হাসীল হওয়ার মাধ্যম ! "

) পবিত্র মক্কা শরীফের হানাফী মাযহাবের মুফতী শায়খ আব্দুর রহমান সিরাজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
পূবসুরী শীর্ষ স্থানীয় ওলামায়ে কিরাম মীলাদ শরীফ এক অনুষ্ঠান পালনকে মুস্তহসান বা ভাল কাজ মনে করেন !"

) মক্কা শরীফ এর মালেকী মাযহাবের মুফতী শায়খ রহমাতুল্লাহ সাহেব উনার ফতোয়া ---

"
অধম উপরোক্ত ফতোয়ার বিষয় সম্পর্কে অবহিত হয়েছি , প্রশ্নের উওরে হানাফী মাযহাবের মুফতী সাহেব যে উত্তর দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ বাস্তব সত্য বিষয় !"

) পবিত্র মক্কা শরীফ এর শাফেঈ মাযহাবের মুফতী সাঈদ ইবনে মুহম্মদ আবসীল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
রহমতের নবী মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন প্রকাশ অপেক্ষা বড় শ্রেষ্ঠ নিয়ামত আর কি হতে পারে !"

) পবিত্র মক্কা শরীফ এর হাম্বলী মাযহাবের মুফতী শায়খ খলফ ইবনে ইব্রাহিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন ---

"
ওলামায়ে কিরাম গনের ঐক্যমতে মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠান করা জায়িয !"

) মক্কা শরীফ এর হানাফী মাযহাবের মুফতী শাইখ আবদুল্লাহ ইবনে সিরাজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
নবীজীর বিলাদত শরীফ উপলক্ষে মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠান করা হয় , তখন ক্বিয়াম শরীফ করে উনার প্রতি সম্মান প্রদরশন করা বিশিষ্ট নামযাদা ইমামদের থেকে উত্তরাধিকার. সূত্রে প্রপ্ত !"

) পবিত্র মক্কা শরীফ এর মালেকী মাযহাবের এর মুফতী আবু বকর হাজী বসাউনি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর ফতোয়া ---

"
মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ এর ফতোয়ার ব্যপারে হানাফী মাযহাবের বর্তমান মুফতী সাহেবের সাথে এক মত , উনার ফতোয়া সঠিক নিরভুল !"

) পবিত্র মক্কা শরীফের হাম্বলী মাযহাবের মুফতী শাইখ মুহম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে হামীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া---

"
মীলাদ শরীফ এর অনুষ্ঠানে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আলোচনা কালে ক্বিয়াম শরীফ করা হচ্ছে শিষ্টাচার অাদবের. দাবি ! ক্বিয়াম শরীফ করা কখনোই শরীয়তের নীতিমালার পরিপন্থি নয় !"

) মক্কা শরীফ এর হাম্বলী মাযহাবের মুফতী শায়খ মুহম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
হ্যাঁ , মীলাদ শরীফ এর অনুষ্ঠানে যখন নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম. উনার বিলাদত শরীফ এর আলোচনা কালে ক্বিয়াম শরীফ করা ওয়াজিব !"

১০) পবিত্র মক্কা শরীফ এর মালেকী মাযহাবের মুফতী হুসাইন ইবনে ইব্রাহীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠানে নবীজী উনার জন্ম মুবারক আলোচনার সময় ক্বিয়াম শরীফ করা অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম গন মুস্তহাসান. মনে করেন !"

১১) পবিত্র মক্কা শরীফ এর শাফেয়ী মাযহাবের ফতোয়া বোর্ডের সভাপতি মুফতী শায়খ মুহম্মদ উমর ইবনে আবু বকর রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতোয়া ---

"
নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাদত শরীফ এর.আলোচনা কালে ক্বিয়াম শরীফ করা মুস্তহাসান , সময় কাজটি করা উত্তম !'"

দলীল ---- দুররুল মুনাজ্জাম - সপ্তম অধ্যায় - দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ -২৩২ পৃষ্ঠা থেকে ২৮৬ পৃষ্ঠা ! ইশবাউল কালাম ! হাক্বীকতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী !

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদেরকে প্রতিটি ঘরে সকাল সন্ধ্যা দায়িমীভাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা তথা অনন্তকালব্যাপী আল্লহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খতামুন নাবীয়্যিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পেশ করা, উনার ছানা-ছিফত করা, জারী করার মাধ্যমে সকল ফাযায়িল-ফযিলত তথা চরম সন্তষ্টি লাভ করার তৌফিক দান করুন।










No comments:

Post a Comment