আল্লাহ
পাক
সংশ্লিষ্ট সহীহ
আক্বীদা
পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত আয়াত
শরীফে
“ﻣﻜﺮ” “মকর”, ” ﻋﺼﻰ ” “আছা” ও ” ﺿﺎﻝ” “দাল্লুন” শব্দের
ব্যাখ্যা দ্বারা
এটাই
প্রমাণিত হয়েছে
যে,
মহান
আল্লাহ্পাভক-এর
শানে
ব্যবহৃত সকল
শব্দের
সরাসরি
বা
প্রকৃত অর্থ গ্রহণ করা
বৈধ
নয়
বরং
কোন
কোন
ক্ষেত্রে আল্লাহ্ পাক-এর শানে শব্দের
সরাসরি
বা
প্রকৃত
অর্থ গ্রহণ করা কূফরী।
যেমন সূরা বাক্বারায় বর্ণিত
“ﻭﺟﻪ ﺍﻟﻠﻪ ” ও
সূরায়ে
আলে
ইমরানে
বর্ণিত
” ﻣﻜﺮ ﺍﻟﻠﻪ “ই“ﻣﻜﺮ” “মকর”, ”
ﻋﺼﻰ ” “আছা”
ও
” ﺿﺎﻝ” “দাল্লুন” শব্দের
ব্যাখ্যা দ্বারা এটাই
প্রমাণিত হয়েছে
যে,
মহান
আল্লাহ্পাভক-এর
শানে
ব্যবহৃত সকল
শব্দের
সরাসরি
বা
প্রকৃত অর্থ গ্রহণ করা
বৈধ
নয়
বরং
কোন
কোন
ক্ষেত্রেআল্লাহ্ পাক-এর শানে শব্দের
সরাসরি
বা
প্রকৃত
অর্থ গ্রহণ করা কূফরী।
যেমন
সূরা
বাক্বারায় বর্ণিত
“ﻭﺟﻪ ﺍﻟﻠﻪ ” ও
সূরায়ে
আলে
ইমরানে
বর্ণিত
” ﻣﻜﺮ ﺍﻟﻠﻪ ” ইত্যাদি। কারণ
” ﻭﺟﻪ ” শব্দের
প্রকৃত
অর্থ
হচ্ছে-
চেহারা
বা
মুখ-মন্ডল। অথচ আল্লাহ্ পাক
চেহারা
বা
মুখ-মন্ডল হতেও সম্পূর্ণ পবিত্র। আর
” ﻣﻜﺮ” শব্দের
প্রকৃত
অর্থ
হচ্ছে-ধোকাবাজী, প্রতারণা ইত্যাদি। অথচ আল্লাহ্ পাক ধোকাবাজী, প্রতারণা ইত্যাদি হতেও সম্পূর্ণ পবিত্র অতএব, প্রমাণিত হলো
যে,
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর শানে উক্ত
শব্দদ্বয়ের এ
অর্থ
গ্রহণ
করা
সুস্পষ্ট কূফরী।
অনুরূপভাবে মহান
আল্লাহ্ পাক-এর শানে ব্যবহৃত ” ﻧﻮﺭ” “নূর” শব্দেরও সরাসরি
বা
প্রকৃত
অর্থ
গ্রহণ
করা জায়েয নেই বরং
কূফরী।
কারণ
“ﻧﻮﺭ ” “নূর”
শব্দের
প্রকৃত অর্থ হচ্ছে- “আলো”
বা
“জ্যোতি”। অথচ আহলে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা মতে
মহান
আল্লাহ্ পাককে
“আলো”
বা
“জ্যোতি”
বলে
বিশ্বাস করা সুস্পষ্ট র্শিক ও কূফরী।
কেননা মহান
আল্লাহ্ পাককে আলো বা
জ্যোতি
অর্থে
“নূর”
বলার
অর্থই
হলো
মহান আল্লাহ্ পাক-এর ছুরত বা
আকার-আকৃতি সাব্যস্ত করা।
অথচ
আল্লাহ্ পাক
ছুরত
বা
আকার-আকৃতি থেকে
সম্পূর্ণ পবিত্র। যেমন
এ
প্রসঙ্গে প্রখ্যাত হাদীস
বিশারদ,
ইমামুল
মুহাদ্দিসীন, আল্লামা ইমাম
বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
তাঁর
প্রসিদ্ধ কিতাব-
“কিতাবুল আস্মা ওয়াছ্ছফিাত”-এর
২১৮
পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺬﻯ ﻳﺠﺐ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﻭﻋﻠﻰ ﻛﻞ ﻣﺴﻠﻢ ﺍﻥ ﻳﻌﻠﻢ ﺍﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﻟﻴﺲ ﺑﺬﻯ
ﺻﻮﺭﺓ ﻭﻻ ﻫﻴﺌﺔ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺗﻘﺘﻀﻰ ﺍﻟﻜﻴﻔﻴﺔ ﻭﻫﻰ ﻋﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻋﻦ
ﺻﻔﺎﺗﻪ ﻣﻨﻔﻴﺔ .
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই আমাদের
উপর
এবং
সকল
মুসলমানদের উপর একথা
বিশ্বাস করা
ওয়াজিব
যে,
আমাদের
রব।
মহান
আল্লাহ্ পাক
আকৃতি
ও
দেহ
বিশিষ্ট নন।
কারণ আকৃতির জন্য
“কাইফিয়্যাত” অর্থাৎ
দৈর্ঘ্য-প্রস্ত,
নরম-শক্ত ইত্যাদি প্রয়োজন। অথচ
আল্লাহ্ পাক
ও
তাঁর ছিফাতসমূহ “কাইফিয়্যাত” অর্থাৎ
দৈর্ঘ্য-প্রস্ত,
নরম-
শক্ত
ইত্যাদি হওয়া
থেকে
সম্পূর্ণই পবিত্র।”
বিখ্যাত ফক্বীহ,
ইমামুল
হুদা
ওয়াদ্দ্বীন আল্লামা ইমাম ইবনুল
হুমাম
রহমাতুল্লাহি আলাইহি
তাঁর
বিখ্যাত কিতাব
আল মুসাইয়ারাহ্”-এর ২৮ পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻓﻠﻴﺲ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﺑﺬﻯ ﻟﻮﻥ ﻭﻻ ﺭﺍﺋﺤﺔ ﻭﻻ ﺻﻮﺭﺓ ﻭﺑﺸﻜﻞ .
অর্থঃ- “মহান
আল্লাহ্ পাক
রং
ও
গন্ধ
বিশিষ্ট নন
এবং আকৃতি ও
দেহ
বিশিষ্টও নন।”
হুজ্জাতুল ইসলাম,
ইমাম
ফী
ইল্মিল
কালাম
আল্লামা ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
তাঁর
সুপ্রসিদ্ধ কিতাব
“ইহইয়াউ
উলুমিদ্দীন”-এর
১ম
খন্ড,
৮১
পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻣﻊ ﻛﻮﻧﻪ ﻣﻨﺰﻫﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻭﺍﻟﻤﻘﺪﺍﺭ ﻣﻘﺪﺳﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﺠﻬﺎﺕ ﻭﺍﻻﻗﻄﺎﺭ .
অর্থঃ- “মহান
আল্লাহ্ পাক
“ছুরত”
অর্থাৎ
আকার-আকৃতি এমনকি সমস্ত
“জেহাত”
বা
দিক
হতেও
পবিত্র।”
উপরোক্ত আলোচনা
দ্বারা
প্রমাণিত হলো
যে,
মহান আল্লাহ্ পাক-এর শানে ব্যবহৃত “নূর”
শব্দের
প্রকৃত
অর্থ
মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়
বরং
তার
তা’বিলী অর্থই
গ্রহণযোগ্য। যেমন, ﻭﺟﻪ ও
ﻣﻜﺮ শব্দের
ক্ষেত্রে গ্রহণ
করা হয়েছে।
অথচ
জাতী
নূরে
বিশ্বাসীরা মহান আল্লাহ্ পাক-এর শানে ব্যবহৃত “ﻧﻮﺭ ” “নূর” শব্দের
তাবিলী অর্থ
গ্রহণ
না
করে
সরাসরি
বা
প্রকৃত
অর্থে আল্লাহ্ পাককে
“নূর”
বলে
থাকে।
আর পূর্বেই বর্ণিত
হয়েছে
যে,
” ﻧﻮﺭ” “নূর”
শব্দের
প্রকৃত অর্থে আল্লাহ্ পাককে
“নূর”
বলা
কূফরী।
তাই
অনুসরণীয় মুফাস্সিরীন-ই-কিরামগণ আয়াত শরীফে
বর্ণিত ও আল্লাহ্ পাক-এর শানে ব্যবহৃত ” ﻧﻮﺭ” “নূর”
শব্দের প্রকৃত
অর্থ
গ্রহণ
না
করে
তাবিলী
অর্থই
গ্রহণ করেছেন। যা
এইলিংকে বর্ণিত
পোস্টে প্রদত্ত “সূরায়ে নূর,” “সূরায়ে
আরাফ”
ও “সুরায়ে যুমারে”
বর্ণিত
আয়াত
শরীফত্রয়ের ব্যাখ্যা দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবেই
প্রমাণিত হয়েছে।
প্রমাণিত হয়েছে যে,
“সূরায়ে
নূর,
সূরায়ে
আরাফ
ও
সূরায়ে যুমারে” বর্ণিত
‘নূর’
শব্দ
দ্বারা
মহান
আল্লাহ্ পাক কখনোই “নূর
বা
আলো”
সাব্যস্ত হননা।
কাজেই
জাতি নূরে বিশ্বাসীরা মহান
আল্লাহ্ পাককে
নূর
বা
আলো সাব্যস্ত করতে
গিয়ে
যে
সকল
আয়াত
শরীফসমূহ দলীল হিসেবে পেশ
করে
থাকে
তা
তাদের
বক্তব্যের স্বপক্ষে মোটেও
দলীল
হিসেবে
গ্রহণযোগ্য নয়।
অতঃপর জাতী
নূরে
বিশ্বাসীরা মহান
আল্লাহ্ পাককে “নূর
বা
আলো”
সাব্যস্ত করতে
গিয়ে
বলে থাকে যে,
“মহান
আল্লাহ্ পাক-এর ৯৯টি নাম মুবারকের মধ্যে
একটি
নাম
হচ্ছে-
“নূর”। সুতরাং
মহান আল্লাহ্ পাক-এর জাত “নূর
বা
আলো।”
অথচ তাদের
উক্ত
দাবী
ও
বক্তব্য সম্পূর্ণ অমূলক
ও অজ্ঞতাসূচক। কারণ
উল্লিখিত ৯৯টি
নাম
মুবারক মহান আল্লাহ্ পাক-এর ছিফতী নাম
মুবারকের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ
উক্ত
৯৯টি
নাম
মুবারক
মহান আল্লাহ্ পাক-এর ছিফত বা
গুণাবলী প্রকাশার্থেই ব্যবহৃত হয়েছে।
“জাত
বা
সত্তা”
প্রকাশার্থে নয়।
যদি তাই হয়ে
থাকে
তবে,
ছিফতী নাম “নূর”
শব্দটি
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর জাত “নূর
বা
আলো”
এ
কথা
বুঝানো ক্ষেত্রে কি
করে
দলীল
হিসেবে
গ্রহণযোগ্য হতে পারে? ছিফত
কি
কখনো
জাত
হতে
পারে?
কস্মিনকালেও না।
তাই
ইমাম-মুজতাহিদগণ মহান আল্লাহ্ পাক-এর শানে
ব্যবহৃত উক্ত
“নূর”
শব্দটির “ছিফতী বা গুণবাচক” ও
“তা’বীলী বা ব্যখ্যামূলক” অর্থই
প্রকাশ
করেছেন। যেমন,
বিশ্ব
বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে কুরতুবী”-এর
১২
জিঃ,
২৫৫
পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
” ﺍﻟﻨﻮﺭ ” ﻓﻰ ﻛﻼﻡ ﺍﻟﻌﺮﺏ ﺍﻻﺿﻮﺍﺀ ﺍﻟﻤﺪﺭﻛﺔ ﺑﺎﻟﺒﺼﺮ …….. ﻓﻴﺠﻮﺯ ﺍﻥ
ﻳﻘﺎﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻧﻮﺭ ﻣﻦ ﺟﻬﺔ ﺍﻟﻤﺪﺡ ﻻﻧﻪ ﺍﻭﺟﺪ ﺍﻻﺷﻴﺎﺀ …….. ﻭﻫﻮ
ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﻣﻦ ﺍﻻﺿﻮﺍﺀ .
অর্থঃ- “আরবী
ভাষায়
দৃশ্যমান “আলো
বা
জ্যোতিকে” “নূর” বলে। …… তাই
প্রশংসা বা
ছিফতী
অর্থেই
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর ক্ষেত্রে “নূর”শব্দের ব্যবহার
জায়েয। কারণ মহান
আল্লাহ্ পাকই
সমস্ত
বস্তুর অস্তিত্ত্ব দানকারী। ….. তবে
মহান
আল্লাহ্ পাক “আলো” নন।”
প্রখ্যাত তাফসীরের কিতাব
“তাফসীরে মাযহারী”- এর
৬জিঃ
৫২১পৃষ্ঠায় উল্লেখ
আছে,
” ﻧﻮﺭ” ﻫﻮ ﻣﺼﺪﺭ ﺑﻤﻌﻨﻰ ﺍﻟﻔﺎﻋﻞ ﻳﻌﻨﻰ ﻣﻨﻮﺭ .
অর্থঃ- “নূর”
শব্দটি
মাছদার
যা
ইস্মে
ফায়েলের অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
অর্থাৎ
“নূর”
শব্দের
অর্থ
হচ্ছে-
“আলো দানকারী।”
মশহুর তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে মাজেদী”-এর ৭১৯
পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
উর্দূ
কম্পোজ
করতে
হবে অর্থঃ- “নূর”
প্রকৃত
অর্থে
ঐ
আলোকে
বলে,
যে
আলো দৃশ্যমান। তাই
প্রত্যেক ক্ষেত্রেই “নূর”
শব্দটি
আল্লাহ্ পাক-এর
শানে
মাজাযী
বা
তা’বীলী অর্থে ব্যবহৃত হবে।”
মাওলানা আহমদ
রেজা
খান
সাহেব
তার
“কানযুল ঈমান”-এর ৪২২ পৃষ্ঠায় লিখেন,
অর্থঃ-
“নূর”
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর নাম
মুবারকসমূহের মধ্যে একটি
নাম
মুবারক। হযরত ইবনে আব্বাস
রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
“নূর”
শব্দের
অর্থ
করতে
গিয়ে বলেন, “মহান
আল্লাহ্ পাক
আসমান-জমিনের “হাদী।” অর্থাৎ
তিনি
“নূর”
শব্দকে
“হাদী”
অর্থে
প্রকাশ করেছেন।”
উপরোক্ত কিতাবসমূহের বর্ণনা
দ্বারা
এটা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো
যে,
“মহান
আল্লাহ্ পাক-
এর
জাত
“নূর
বা
আলো”
নয়।
বরং
“নূর”
হচ্ছে-
মহান আল্লাহ্ পাক-এর অসংখ্য ছিফতের
মধ্য
হতে
একটি ছিফত বা
গুণবাচক নাম
মুবারক।
কাজেই
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীর যে
বলে
থাকে,
“মহান আল্লাহ্ পাক-এর ৯৯টি নাম
মুবারকের মধ্যে একটি নাম
মুবারক
হচ্ছে-
“নূর”। তাই “আল্লাহ্ পাক নূর” তাদের
এ
বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল,
বিভ্রান্তিকর ও জিহালতপূর্ণ।
জাতি নূরে
বিশ্বাসীরা মহান
আল্লাহ্ পাককে
“নূর
বা আলো”
সাব্যস্ত করতে
গিয়ে
সর্বশেষ যে
দলীলখানা
পেশ করে
থাকে
তাহলো-
ইমামুল
জলীল,
ইমামে আহলে সুন্নত,
ইমাম
আবুল
হাসান
আশ্য়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
বলেন,
ﺍﻧﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻧﻮﺭ ﻟﻴﺲ ﻛﺎﻻﻧﻮﺍﺭ .
অর্থঃ- “মহান
আল্লাহ্ পাক
“নূর”
তবে
অন্যান্য নূরের মত নন।”
উল্লেখ্য, হযরত
ইমাম
আবুল
হাসান
আশয়ারী
রহমাতুল্লাহি আলাইহি
–এর উক্ত বক্তব্য দ্বারা
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর জাত কখনই
“নূর
বা
আলো”
প্রমাণিত হয়না।
যা
তার
পরবর্তী বক্তব্য দ্বারাই সুস্পষ্ট হয়ে
উঠেছে।
যেমন-
তিনি পরবর্তীতেই বলেছেন,
ﻟﻴﺲ ﻛﺎﻻﻧﻮﺍﺭ .
অর্থাৎ- “মহান
আল্লাহ্ পাক
অন্যান্য “নূর
বা
আলোর”
ন্যায়
“নূর
বা
আলো”
নন।”
এখন প্রশ্ন
হলো-
মহান
আল্লাহ্ পাক
যদি
“নূর”
হন
আর অন্যান্য “নূর
বা
আলোর”
মত
না
হন।
তবে
তিনি
কি হিসেবে, কোন
অর্থে
“নূর?”
মূলতঃ
মহান
আল্লাহ্ পাক
“নূর”
এটা
সত্য
কথাই
তবে তিনি ছিফতী
বা
গুণবাচক ও
তা’বীলী বা ব্যখ্যামূলক অর্থে অর্থাৎ
” ﻣﻨﻮﺭ”
“মুনাব্বির” বা
“আলো
দানকারী”, ”
ﻣﻮﺟﺪ” “মুজিদ”
বা
“অস্তিত্ব দানকারী” ” ﻫﺎﺩﻯ” “হাদী” বা
“হিদায়েত দানকারী” অর্থে
“নূর।”
ইমাম
আবুল হাসান আশয়ারী
রহমাতুল্লাহি আলাইহি
-এর
উক্ত
বক্তব্য দ্বারা
এটাই বুঝানো হয়েছে।
কাজেই হযরত
ইমাম
আবুল
হাসান
আশয়ারী
রহমাতুল্লাহি আলাইহি
–এর উক্ত বক্তব্যকে দলীল
হিসেবে
পেশ
করা
চরম জিহালত বৈ
কিছুই
নয়।
কারণ
তাঁর
উক্ত
বক্তব্য দ্বারা মহান আল্লাহ্ পাক-এর “জাত” কখনই
“নূর
বা
আলো”
প্রমাণিত হয়
না।
প্রদত্ত বক্তব্য দ্বারা
এটাই
প্রমাণিত হলো
যে,
“মহান আল্লাহ্ পাক
“নূর
বা
আলো”
নন।”
বরং
তিনি
“নূর
বা আলোর” স্রষ্টা। মহান
আল্লাহ্ পাককে
“নূর
বা
আলো”ধারণা করা সুস্পষ্ট কুফরী।
এ আক্বীদায়
বিশ্বাসীরা বাতিলফিরক্বা “মুশাব্বিহা ফিরক্বার” অন্তর্ভূক্ত।
সাথে সাথে
এটাও
প্রমাণিত হলো
যে,
কুরআন
শরীফ
ও হাদীস শরীফ-এর যে সকল
বর্ণনা
দ্বারা,
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর
হাত-পা, আকার-আকৃতি,
দেহ,
আলো
ইত্যাদি হওয়া প্রমাণিত হয়।
সে
সকল
বর্ণনাসমূহের অবশ্যই তা’বীলী
বা
ব্যখ্যামূলক অর্থ
গ্রহণ
করতে
হবে,
সরাসরী
বা
প্রকৃত
অর্থ
কখনই
গ্রহণযোগ্য নয়।
আরো প্রমাণিত হয়েছে
যে,
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীরা মহান আল্লাহ্ পাককে
“নূর
বা
আলো”
সাব্যস্ত করতে গিয়ে কুরআন
শরীফ,
হাদীস
শরীফ
থেকে
যে
দলীলসমূহ পেশ করে
থাকে
তা
এক্ষেত্রে মোটেও
গ্রহণযোগ্য নয়। বরং
তা
ভূল
ও
পরিত্যাজ্য। সুতরাং
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীরা যে
বলে
থাকে,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু “নূরের তৈরিই
নন”
বরং
তিনি
“মহান আল্লাহ্ পাক-এর জাত” তথা
“জাতি
নূরে
তৈরি।”
তাদের এ
বক্তব্য শুধু
অশুদ্ধই প্রমাণিত হয়নি
বরং কূফরীমূলকও প্রমাণিত হয়েছে
কারণ
যেখানে
মহান আল্লাহ্ পাক-এর জাতই “নূর”
নয়
সেখানে
জাতি
নূরের প্রশ্নই আসতে
পারে
না।
মহান আল্লাহ্ পাক উপকরণ
ব্যতীত কিছু
তৈরী করতে অক্ষম
জাতী
নূরে
বিশ্বাসীদের বক্তব্য হতে
দ্বিতীয়তঃ যে কূফরীমূলক ও
আপত্তিকর বক্তব্য ফুটে
উঠে,
তাহলো-
“মহান আল্লাহ্ পাক
উপকরণ
ব্যতীত
কোন
বস্তু
তৈরী করতে অক্ষম।”
আর
অক্ষম
বলেই
আপন
ডান
হাত
দ্বারা
বাম
সিনার
থেকে
খামছী
মেরে
এক
টুকরা
“নূর”
বের করেন এবং
সে
“নূর”
দ্বারা
তাঁর
হাবীবকে সৃষ্টি
করেন।”
(নাউযুবিল্লাহি মিন
যালিক)
উপরোক্ত বক্তব্য যে,
সুস্পষ্ট কূফরী
ও শিরকের অন্তর্ভূক্ত তাতে
বিন্দুমাত্রও সন্দেহ
নেই।
মূলতঃ
তারা
উক্ত
বক্তব্যের দ্বারা
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর
কুদরতকেই শুধু
অস্বীকার করেনি
বরং
পবিত্র
কালামে
পাকের
অসংখ্য
আয়াত
শরীফকেও অস্বীকার করে
বসেছে।
কারণ
পবিত্র
কালামে পাকের অসংখ্য
স্থানে
উল্লেখ
আছে
যে,
“মহান আল্লাহ্ পাক
সর্বপ্রকার “কুদরত
বা
ক্ষমতার” অধিকারী। যেমন
পবিত্র
কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
ﺍﻥ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻰ ﻛﻞ ﺷﻴﺌﻰ ﻗﺪﻳﺮ .
অর্থঃ-
“নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ্ পাক
সকল
বিষয়ের
উপর ক্ষমতাবান।”
কাজেই
আপন
“কুদরত
ও
এরাদা”
দ্বারা
সম্পূর্ণ নতুনভাবে বিনা
উপাদানে “নাই”
হতে
কোন
বস্তু
সৃষ্টি
করাটাই
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর কুদরত। আর
সৃষ্টির মূল হাক্বীক্বত এখানেই
নিহিত।
মহান
আল্লাহ্ পাক
এ
প্রসঙ্গে পবিত্র
কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ করেন,
ﺍﻧﻤﺎ
ﺍﻣﺮﻩ ﺍﺫﺍ ﺍﺭﺍﺩ ﺷﻴﺌﺎ ﺍﻥ ﻳﻘﻮﻝ ﻟﻪ ﻛﻦ ﻓﻴﻜﻮﻥ .
অর্থঃ-
নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ্ পাক-এর কুদরত এই
যে,
তিনি
যখন
কোন
বস্তু
সৃষ্টি
করার
“এরাদা
বা
ইচ্ছা” করেন, তখন সে
বস্তুটিকে বলেন,
হয়ে
যাও।
সাথে
সাথেই
সেটি
হয়ে
যায়।”
(সূরা
ইয়াসীন/
৮২)
মহান
আল্লাহ্ পাক
পবিত্র
কালামুল্লাহ্ শরীফের অনত্র আরো
ইরশাদ
করেন,
ﻓﺎﺫﺍ
ﻗﻀﻰ ﺍﻣﺮﺍ ﻓﺎﻧﻤﺎ ﻳﻘﻮﻝ ﻟﻪ ﻛﻦ ﻓﻴﻜﻮﻥ .
অর্থঃ-
“যখন
মহান
আল্লাহ্ পাক
কোন
বস্তু
সৃষ্টি
করার ইচ্ছা পোষণ
করেন,
তখন
সে
বস্তুকে লক্ষ্য
করে
বলেন,
হয়ে
যাও।
তৎক্ষনাত সেটি
সৃষ্টি
হয়ে
যায়।”
(সূরা মু’মিনুন/
৬৮)
এরপরেও
কি
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীরা বলবে যে,
মহান
আল্লাহ্ পাক
উপাদান
ব্যতীত
কিছুই তৈরী করতে
পারেন
না। মূলতঃ
যারা
বলে,
“মহান আল্লাহ্ পাক
বিনা
উপাদানে কিছুই
সৃষ্টি
করতে পারেন না।”
তারা
আসলে
ইহুদীদের ন্যায়
নিজেদের ক্ষমতার উপর
আল্লাহ্ পাক-এর ক্ষমতাকে ক্বিয়াস করেছে। ইহুদীরা ক্বিয়াস করেছিল,
মানুষ
যেমন-
কাজের
ক্ষেত্রে নিজের
হাত,
পা
ইত্যাদি অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ ব্যবহার করে নিজের শারীরিক শক্তি প্রয়োগ
করে
কাজ
করতে
থাকে।
যার
ফলে
কাজ করতে করতে
ক্লান্ত হয়ে
পড়ে,
আল্লাহ্ পাকও
বুঝি তদ্রুপ। তাই
ইহুদীরা বলেছিল,
“মহান
আল্লাহ্ পাক
ছয় দিনে আসমান-জমিন সৃষ্টি করে
ক্লান্ত হয়ে
পড়ার কারণে
শনিবার
দিন
তিনি
বিশ্রাম গ্রহণ করেছিলেন।” ইহুদীদের এ
ক্বিয়াসকে মিথ্যা
ও
ভুল প্রমাণ করতে
আল্লাহ্ পাক
নিম্নোক্ত আয়াত
শরীফ নাযিল করেন।
আল্লাহ্ পাক
ইরশাদ
করেন,
ﻭﻟﻘﺪ
ﺧﻠﻘﻨﺎ ﺍﻟﺴﻤﻮﺍﺕ ﻭﺍﻻﺭﺽ ﻭﻣﺎﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻓﻰ ﺳﺘﺔ ﺍﻳﺎﻡ ﻭﻣﺎ ﻣﺴﻨﺎ ﻣﻦ
ﻟﻐﻮﺏ
.
অর্থঃ-
“আমি
অবশ্যই
আকাশ
মন্ডলি
ও
পৃথিবী
এবং তাদের মধ্যকার সকল
বস্তুকে ছয়
দিনে
সৃষ্টি
করেছি।
অথচ
আমাকে
এক
বিন্দু
ক্লান্তিও স্পর্শ করেনি।”(সূরায়ে
ক্বাফ/
)
এখন
কেউ
বলতে
পারে
যে,
আল্লাহ্ পাকতো
নিজেই কুরআন শরীফে
ইরশাদ
করেছেন,
ﻭﺍﻧﺰﻝ
ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﻣﺎﺀ ﻓﺎﺧﺮﺝ ﺑﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺜﻤﺮﺍﺕ ﺭﺯﻗﺎ ﻟﻜﻢ .
অর্থঃ-
“তিনি
আসমান
হতে
পানি
নাযিল
করে
উহা দ্বারা তোমাদের রিযিকের জন্য
বিভিন্ন ফল-ফলাদি
সৃষ্টি
করে
থাকেন।”
আর
একথা
সকলেই
জানেন
যে,
পানি
এবং
মাটি ফল সৃষ্টির মূল
উপাদান। তাতে
কি
প্রমাণিত হয়
না যে,
বিনা
উপাদানে কিছুই
সৃষ্টি
হয়
না। মূলতঃ আল্লাহ্ পাক
পানি
এবং
মাটিকে
প্রথম অবস্থায় যেমন
বিনা
উপাদানে “নাই”
হতে
সৃষ্টি করতে পেরেছেন, তেমনি
মাটি,
পানি
এবং
গাছ ছাড়াও তিনি
ফল
সৃষ্টি
করার
ক্ষমতা
রাখেন।
তবে
তিনি
বিশেষ
মুছলেহাতের কারণে
প্রথমে
বিনা উপাদানে উপাদন
সৃষ্টি
করে,
সেই
সব
উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্টি করার
ব্যবস্থা চালু করেছেন। এ
প্রসঙ্গে “তাফসীরে বায়জবীতে” উল্লেখ আছে যে,
ﻭﻫﻮ
ﻗﺎﺩﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻥ ﻳﻮﺟﺪ ﺍﻻﺷﻴﺎﺀ ﻛﻠﻬﺎ ﺑﻼ ﺍﺳﺒﺎﺏ ﻭﻣﻮﺍﺩ ﻛﻤﺎ ﺍﺑﺪﻉ
ﻧﻔﻮﺱ
ﺍﻻﺳﺒﺎﺏ ﻭﺍﻟﻤﻮﺍﺩ ﻭﻟﻜﻦ ﻟﻪ ﻓﻰ ﺍﻳﺠﺎﺩﻫﺎ ﻣﺪﺭﺟﺎ ﻣﻦ ﺣﺎﻝ ﺍﻟﻰ
ﺣﺎﻝ
ﺻﻨﺎﺋﻊ ﻭﺣﻜﻤﺎ ﻳﺠﺪﺩ ﻓﻴﻬﺎ ﻻﻭﻟﻰ ﺍﻻﺑﺼﺎﺭ ﻋﺒﺮﺍ ﻭﺳﻜﻮﻧﺎ ﺍﻟﻰ
ﻋﻈﻴﻢ
ﻗﺪﺭﺗﻪ ﻟﻴﺲ ﺫﺍﻟﻚ ﻓﻰ ﺍﻳﺠﺎﺩﻫﺎ ﺩﻓﻌﺔ .
অর্থাৎ-
আল্লাহ্ পাক
যাবতীয়
কার্যকরণ ও
উপায় উপকরণকে অপর
কোন
কার্যকরণ ও
উপায়
উপকরণ
ছাড়াই
প্রথম
অবস্থায় যেভাবে
“নাই”
হতে
সম্পূর্ণ নতুন ভাবে সৃষ্টি
করেছিলেন, তদ্রুপ
তিনি
কোন
প্রকার
কার্যকরণ ও
উপাদান
ছাড়াই
সকল
বস্তু
সৃষ্টি
করতে এখনও সক্ষম।
তবে
তা
না
করে
তিনি
এ
সব
বস্তুকে তাঁর
সৃজিত
নানা
উপায়
উপকরণ
ও
উপাদান
দ্বারা পর্যায়ক্রমে ধীরে
ধীরে
বিভিন্ন রূপান্তরের মাধ্যমে সৃষ্টি করে
থাকেন।
তার
ভিতর
স্রষ্টার অসংখ্য হেকমত ও
মুছলেহাত বিদ্যমান রয়েছে।
এর
মধ্যে
তিনি জ্ঞানী লোকদের
জন্য
অগণিত
নতুন
নতুন
উপদেশ
ও শিক্ষণীয় বস্তু
নিহিত
রেখেছেন। যার
কারণে জ্ঞানী লোকেরা
স্রষ্টার সৃষ্টি
কৌশল
অবলোকন
ও উপলব্ধি করে
তার
মধ্যে
গভীর
চিন্তা-ভাবনার সুযোগ
পায়। ফলে তাদের
জ্ঞান
চক্ষু
প্রসারিত হতে
থাকে এবং স্রষ্টার সীমাহীন জ্ঞান,
অসীম
বিচক্ষণতা ও দূরদর্শীতা এবং
মহান
কুদরতের প্রতি
তাদের
আস্থা
ও বিশ্বাস উত্তরোত্তর বৃদ্ধি
পেতে
থাকে
এবং
অবিচল ও মজবুত
হতে
থাকে।
এভাবে
স্রষ্টার সঠিক
পরিচয়
লাভের
পথ
তাদের
জন্য সুগম হয়।
কিন্তু
এসব
বস্তুকে ধীরে
ধীরে
পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি না
করে
হঠাৎ
সৃষ্টি
করা
হলে
এত
সব উপকারিতা কখনও
অর্জিত
হত
না।অতএব, বিভিন্ন উপাদান
দ্বারা
বস্তু
জগতে বিভিন্ন বস্তুকে সৃষ্টি
করার
বিধান
দেখে
কোন নাদান যেন
এ
ধারণা
না
করে
যে,
আল্লাহ্ পাক
বুঝি আসলেই উপাদান
ব্যতিরেকে কোন
কিছু
সৃষ্টি
করার ক্ষমতা রাখেন
না।
উপরোক্ত আলোচনা
দ্বারা
সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে,
মহান
আল্লাহ্ পাক
উপাদান
ব্যতীতই সবকিছু
সৃষ্টি
করতে
সক্ষম।
এর
বিপরীত
আক্বীদা পোষণ
করা সুস্পষ্ট কূফরী।
মহান আল্লাহ্ পাক দেহ্ বা আকার-আকৃতি বিশিষ্ট
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীদের বক্তব্য থেকে
তৃতীয়
যে কূফরীমূলক ও
আপত্তিকর বক্তব্য ফুটে
উঠে
তাহলো-
“মহান আল্লাহ্ পাক-এর দেহ রয়েছে।”
কারণ,
“ডান
হাত দ্বারা বাম
সিনার
থেকে
খামছী
মেরে
…।” তাদের এ
কথার
দ্বারা
এটাই
বুঝা
যায়
যে,
মহান
আল্লাহ্ পাক-
এর
মানুষের ন্যায়
হাত,
শরীর
বা
আকৃতি
রয়েছে।
(নাউযুবিল্লাহি
মিন
যালিক)
অথচ
তাদের
এ
বক্তব্য আহলে
সুন্নত
ওয়াল
জামায়াত- এর
সকল
ইমাম-মুজতাহিদগণের ঐক্যমতে সুস্পষ্ট ও
অকাট্ট
কূফরী।
বিশ্বখ্যাত ও
নির্ভরযোগ্য সকল আক্বাইদের কিতাব
ও
অন্যান্য কিতাবসমূহে এ
কথাই
উল্লেখ
আছে
যে,
মহান
আল্লাহ্ পাক
দেহ
বা
আকার-
আকৃতি
বিশিষ্ট নন।
মহান
আল্লাহ্ পাক
দেহ
বা
আকার-আকৃতি বিশিষ্ট একথা
বিশ্বাস করা
সুস্পষ্ট কূফরী। যেমন-
এ
প্রসঙ্গে প্রখ্যাত হাদীস
বিশারদ,
ইমামুল
মুহাদ্দিসীন, আল্লামা ইমাম
বায়হাক্বী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি
) তাঁর
প্রসিদ্ধ কিতাব-
“কিতাবুল আস্মা
ওয়াছ্ছফিাত”- এর
২১৮
পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻓﺎﻥ
ﺍﻟﺬﻯ ﻳﺠﺐ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﻭﻋﻠﻰ ﻛﻞ ﻣﺴﻠﻢ ﺍﻥ ﻳﻌﻠﻢ ﺍﻥ ﺭﺑﻨﺎ ﻟﻴﺲ ﺑﺬﻯ
ﺻﻮﺭﺓ
ﻭﻻ ﻫﻴﺌﺔ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺗﻘﺘﻀﻰ ﺍﻟﻜﻴﻔﻴﺔ ﻭﻫﻰ ﻋﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻋﻦ
ﺻﻔﺎﺗﻪ
ﻣﻨﻔﻴﺔ .
অর্থঃ-
“নিশ্চয়ই আমাদের
উপর
এবং
সকল
মুসলমানদের উপর একথা বিশ্বাস করা
ওয়াজিব
যে,
আমাদের
রব।
মহান
আল্লাহ্ পাক
“আকৃতি
ও
দেহ”
বিশিষ্ট নন।
কারণ আকৃতির জন্য
“কাইফিয়্যাত” অর্থাৎ
দৈর্ঘ্য-প্রস্ত,
নরম-শক্ত ইত্যাদি প্রয়োজন। অথচ
আল্লাহ্ পাক
ও
তাঁর ছিফাতসমূহ “কাইফিয়্যাত” অর্থাৎ
দৈর্ঘ্য-প্রস্ত,
নরম-
শক্ত
ইত্যাদি হওয়া
থেকে
সম্পূর্ণই পবিত্র।”
বিখ্যাত ফক্বীহ,
ইমামুল
হুদা
ওয়াদ্দ্বীন আল্লামা ইমাম ইবনুল হুমাম
(রহমাতুল্লাহি আলাইহি
) তাঁর
বিখ্যাত কিতাব
“আল মুসাইয়ারাহ্”-এর
২৮
পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻓﻠﻴﺲ
ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﺑﺬﻯ ﻟﻮﻥ ﻭﻻ ﺭﺍﺋﺤﺔ ﻭﻻ ﺻﻮﺭﺓ ﻭﺑﺸﻜﻞ .
অর্থঃ-
“মহান
আল্লাহ্ পাক
রং
ও
গন্ধ
বিশিষ্ট নন
এবং আকৃতি ও
দেহ
বিশিষ্টও নন।”
হুজ্জাতুল ইসলাম,
ইমাম
ফী
ইল্মিল
কালাম আল্লামা ইমাম
গাজ্জালী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি
) তাঁর
সুপ্রসিদ্ধ
কিতাব
“ইহইয়াউ
উলুমিদ্দীন”-এর
১ম
খন্ড,
৮১
পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻣﻊ
ﻛﻮﻧﻪ ﻣﻨﺰﻫﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻭﺍﻟﻤﻘﺪﺍﺭ ﻣﻘﺪﺳﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﺠﻬﺎﺕ ﻭﺍﻻﻗﻄﺎﺭ .
অর্থঃ-
“মহান
আল্লাহ্ পাক
“ছুরত”
অর্থাৎ
আকার- আকৃতি এমনকি সমস্ত
“জেহাত”
বা
দিক
হতেও
পবিত্র।”
প্রসিদ্ধ, নির্ভরযোগ্য ও
বিশ্ব
বিখ্যাত কিতাব
“শরহে আক্বাইদে নসফীতে”
উল্লেখ
করা
হয়েছে,
ﻭﻻ
ﺟﺴﻢ ﻭﻻﺟﻮﻫﺮ ﻭﻻﻣﺼﻮﺭ ﺍﻯ ﺫﻯ ﺻﻮﺭﺓ ﻭﺷﻜﻞ ﻣﺸﻜﻞ ﻣﺜﻞ
ﺻﻮﺭﺓ
ﺍﻻﻧﺴﺎﻥ ﺍﻭ ﺍﻟﻔﺮﺱ ﺑﺎﻥ ﻟﻬﺎ ﺑﻮﺍﺳﻄﺔ ﺍﻟﻜﻤﻴﺎﺕ ﺗﻠﻚ ﻣﻦ ﺧﻮﺍﺹ
ﺍﻻﺟﺴﺎﻡ
ﺟﺺ ﺫﻯ ﺣﺪ ﻭﻧﻬﺎﻳﺔ .
অর্থঃ-
“তিনি
(ﺟﺴﻢ ) অর্থাৎ
দেহ
বিশিষ্ট নন।
(কারণ দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে এবং দেহ
স্থান দখলকারী)।
তিনি
মানুষ
ও
প্রাণীর ( ﺻﻮﺭﺓ) বা আকার-
আকৃতি
হলো-
দেহের
বৈশিষ্ট্য, যা
দেহের প্রান্তসীমা ও
পরিধি
তথা
দৈর্ঘ্য, প্রস্থ
বেধ
দ্বারা অর্জিত অর্থাৎ
আয়তন
ও
পরিমাণ
হতে
সৃষ্টি
হয়ে থাকে। তিনি
প্রান্ত, সীমা
ও
পরিধি
বিশিষ্ট নন।
এ
উপমহাদেশের সুপ্রসিদ্ধ ও
প্রখ্যাত হাদীস
বিশারদ ইমামুল মুহাদ্দিসীন, আল্লামা শাহ্
ওয়ালীউল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
তাঁর
নির্ভরযোগ্য কিতাব “আল ক্বাওলুল জামীল”-এর ৩১ পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﻣﻨﺰﻩ
ﻣﻦ ﺟﻤﻴﻊ ﺳﻤﺎﺕ ﺍﻟﻨﻘﺺ ﻭﺍﻟﺰﻭﺍﻝ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﺴﻤﻴﺔ ﻭﺍﻟﺘﺠﻴﺰ
ﻭﺍﻟﻌﺮﺿﻴﺔ
ﻭﺍﻟﻬﺔ ﻭﺍﻻﻟﻮﺍﻥ ﻭﺍﻻﺷﻜﺎﻝ .
অর্থঃ-
মহান
আল্লাহ্ পাক
অপূর্ণতা ও
নশ্বরতার যাবতীয় ছিফ্ত বা
গুণ
হতে
সম্পূর্ণই মুক্ত।
তিনি
দেহ বিশিষ্ট, স্থান
দখলকারী, কোনজেহাত বা
দিকে অবস্থানকারী, বর্ণ
ও
আকৃতিধারী এবং
দেহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যধারী নন।”
বিখ্যাত ও
নির্ভরযোগ্য কিতাব
“শরহে
মাওয়াক্বিফ”-
এর
৫৭১
পৃষ্ঠায় উল্লেখ
আছে,
ﺍﻧﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻟﻴﺲ ﻓﻰ ﺟﻬﺔ ﻭﻻ ﻓﻰ ﻣﻜﺎﻥ ﻣﻦ ﺍﻻﻣﻜﻨﺔ ﻭﺧﺎﻟﻒ ﻓﻴﻪ
ﺍﻟﻤﺸﺒﻬﺔ
.
অর্থঃ-
নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ্ পাক
কোন
দিকে
ও কোন স্থানে
নন।
কিন্তু
পথভ্রষ্ট মুশাব্বিহা ফিরকা
এ
মতটির
বিরোধীতা করে
থাকে।”
সুপ্রসিদ্ধ আলেমেদ্বীন আল্লামা রমজান আফেনদী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি
) তাঁর
লিখিত
“শরহে
আক্বাইদ”-এর
১০৬ ও
১০৮
পৃষ্ঠার হাশিয়ায় উল্লেখ
করেছেন,
ﻭﻻ
ﻣﺼﻮﺭ ﺍﻯ ﺫﻯ ﺻﻮﺭﺓ ﻭﺷﻜﻞ ﻻﻥ ﺗﻠﻚ ﻣﻦ ﺧﻮﺍﺹ ﺍﻻﺟﺴﺎﻡ
………
ﻭﻻ ﻳﺘﻤﻜﻦ ﻓﻰ ﻣﻜﺎﻥ .
অর্থঃ-
মহান
আল্লাহ্ পাক
ছূরত
ও
শেকল
অর্থাৎ আকার-আকৃতি
বিশিষ্ট নন।
কেননা
আকার-আকৃতি
দেহের
বৈশিষ্ট্য। …. এবং
তিনি
কোন
স্থানে স্থিতিশীল নন।”
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর “জাতের পরিচয়”
সম্পর্কিত উপরোক্ত আলোচনা
দ্বারা
সুস্পষ্ট ও
অকাট্যভাবেই
প্রমাণিত হলো
যে,
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর “জাত” ওয়াজিবুল ওজুদ,
তাঁর
জাত
হাদেস
বা
সৃষ্ট
নয়,
মহান
আল্লাহ্ পাক
জিস্ম
বা
দেহ,
ছূরত
বা
আকার-আকৃতি এবং দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ভেদ ও
তাশবীহ্ বা
সাদৃশ্য ইত্যাদি
হতে
সম্পূর্ণরূপেই পবিত্র।
মহান আল্লাহ্ পাক-এর জাতের অংশ
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীদের বক্তব্য থেকে
চতুর্থ
যে কূফরীমূলক ও
আপত্তিকর বক্তব্য ফুটে
উঠে
তাহলো-
“সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া
সাল্লাম মহান
আল্লাহ্
পাক-এর জাতের অংশ।”
(নাউযুবিল্লাহি মিন
যালিক)
মূলতঃ
জাতি
নূরে
বিশ্বাসীদের এবক্তব্যটিও সুস্পষ্ট কূফরী ও
আহলে
সুন্নত
ওয়াল
জামায়াত-এর
খিলাফ
ও
র্শিকের অন্তর্ভূক্ত। কারণ
আহলে
সুন্নত
ওয়াল জামায়াতের সকল
ইমাম-মুজতাহিদগণই একমত যে, মহান
আল্লাহ্ পাক
“লা-শারীক” অর্থাৎ তাঁর
কোনই শরীক বা
অংশী
নেই।
প্রতিটি মুসলমানই এই
স্বাক্ষী প্রদাণ করে
থাকে।
যেমন, “আমি স্বাক্ষি দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ্ পাক ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক। তাঁর কোন শরীক বা অংশী নেই। আমি আরো স্বাক্ষি দিচ্ছি যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল।”
বস্তুতঃ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া
সাল্লাম-এর
জাতে
পাক
হচ্ছে-
হাদেছ।
আর
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর জাতে
পাক হচ্ছে- ক্বাদীম। ক্বাদীম কখনোই
হাদেছ
সৃষ্টির
উপাদান
হতে
পারে
না।
যেমন,
এ
প্রসঙ্গে মাওলানা আব্দুল হাই
লাখনবী
সাহেব
তাঁর
“মাজমুয়ায়ে ফতওয়া”-
এর
২য়
জিঃ
২৬০
পৃষ্ঠায় লিখেন,
ﺍﻥ
ﺫﺍﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺪﻳﻢ ﻭﺫﺍﺕ ﻧﺒﻴﻨﺎ ﺣﺎﺩﺙ ﻻﻳﻜﻮﻥ ﺍﺻﻼ ﻭﻣﺎﺩﺓ ﻟﻠﺤﺎﺩﺙ
ﻻﻥ
ﺍﻟﻘﺪﻳﻢ ﻓﺮﺩ ﻭﺍﺣﺪ ﻻﻳﺘﺠﺰﻯ ﻭﻻ ﻳﺘﺒﻌﺾ ﻓﻼ ﻳﻨﻔﺼﻞ ﻣﻨﻪ ﺷﺊ
ﻓﺎﻟﺬﻯ
ﻻﻳﺘﺠﺰﻯ ﻭﻻ ﻳﻨﻔﺼﻞ ﻣﻨﻪ ﺷﺊ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﺻﻼ ﻟﺸﺊ ﻛﻤﺎ ﻳﻔﻬﻢ
ﻣﻦ
ﻛﺘﺐ ﺍﻟﻌﻘﺎﺋﺪ .
অর্থঃ-
“মহান
আল্লাহ্ পাক-এর জাত ক্বাদীম। আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
জাত
হচ্ছে
হাদেছ।
আর
ক্বাদীম কখনো হাদেছ
সৃষ্টির মূল
বা
উপাদান
হতে
পারে
না।
কেননা
জাতে
ক্বাদীম এক
ও
একক।
তিনি
খন্ডিত
ও বন্টিত হন
না।
বিভক্ত
ও
বিভাজ্য হন
না।
তাঁর
জাত হতে কোন
কিছু
বিচ্ছিন্ন হতে
পারে
না।
তাই
আল্লাহ্ পাক-এর
জাত
কস্মিনকালেও অন্য
কোন
বস্তুর
উপাদান বা ধাতু
হতে
পারে
না।
এ
বিষয়টি
আক্বীদার কিতাবসমূহে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত
আছে।
”
মাওলানা আব্দুল
হাই
লাখনবী
উক্ত
“মজমুয়ায়ে ফতওয়ায়” আরো
উল্লেখ
করেন,
ﺍﻥ
ﺫﺍﺕ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺣﺎﺩﺛﺔ ﻭﺍﻟﻘﺪﻳﻢ ﻭﻋﺪﻡ ﺳﺒﻖ
ﺍﻟﻌﺪﻡ
ﻣﺨﺘﺼﺎ ﺑﺎﻟﺤﻖ ﺑﻤﻌﻨﻰ ﺍﻻﺯﻟﻴﺔ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﻠﻰ ﻋﻨﺪ ﺍﻫﻞ
ﺍﻻﺳﻼﻡ
ﻛﻤﺎ ﺍﻥ ﺍﻟﻘﺪﻡ ﺑﻤﻌﻨﻰ ﻋﺪﻡ ﺍﻻﺣﺘﻴﺎﺝ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﻐﻴﺮ ﻣﺨﺘﺺ
ﺑﺎﻟﻮﺍﺟﺐ
ﺍﺗﻔﺎﻗﺎ ﻭﻗﺪ ﺩﻟﺖ ﺍﺧﺒﺎﺭ ﺻﺤﻴﺤﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ
ﻣﻌﻪ
ﺷﺊ ﻭﺍﻟﺬﺍﺕ ﺍﻻﻟﻬﻴﺔ ﻟﻴﺴﺖ ﻣﺎﺩﺓ ﺑﺬﺍﺕ ﺍﻟﻨﺒﻮﻳﺔ ﻭﻛﻴﻒ ﻳﺠﻮﺯ ﺍﻥ
ﻳﻜﻮﻥ
ﺍﻟﻘﺪﻳﻢ ﻣﺎﺩﺓ ﻟﻠﺤﺎﺩﺙ .
অর্থঃ-
“সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন,
খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুর
পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
জাত
হাদেছ।
আর
মহান
আল্লাহ্ পাক-এর
জাত
ক্বাদীম। তিনি
অনাদিকাল থেকেই বিরাজমান। অস্তিত্বহীনতা এক
মুহুর্তের জন্যও
তাঁর উপর অতিবাহিত হয়
নি।
তিনি
স্বয়ম্ভু অস্তিত্বের ব্যাপারে তাঁর
জাত
কারো
মুহতাজ
হয়নি।
এ
অর্থে সকল মুসলমানের ঐক্যমতে একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর জাতে ওয়াজিবুল ওজুদই ক্বাদীম। বহু
সহীহ্
হাদীস শরীফ দ্বারা
প্রমাণিত রয়েছে
যে,
পূর্বে
আল্লাহ্ পাক একাই
ছিলেন
অন্য
কোন
কিছু
তাঁর
সাথে
ছিল
না।
আল্লাহ্ পাক-এর জাত রাসূলে
পাক-এর জাতের
উপাদান হতে পারে
না।
ক্বাদীম কি
করে
হাদেছের উপাদান হতে পারে?
মহান
আল্লাহ্ পাক
এ
বিষয়টি
“সূরায়ে
ইখলাছে”
আরো
সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ
করেছেন। যেমন,
আল্লাহ্ পাক ইরশাদ
করেন,
ﻗﻞ
ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺣﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺼﻤﺪ ﻟﻢ ﻳﻠﺪ ﻭﻟﻢ ﻳﻮﻟﺪ ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻟﻪ ﻛﻔﻮﺍ ﺍﺣﺪ .
অর্থঃ-
“হে
হাবীব!
আপনি
বলুন,
আল্লাহ্ পাক
এক। আল্লাহ্ পাক বেনিয়াজ, আল্লাহ্ পাক
থেকে
কেউ জন্ম নেয়নি
এবং
আল্লাহ্ পাককেও
কেউ
জন্ম
দেয়নি।
আর
আল্লাহ্ পাক-এর সমকক্ষও কেউ
নেই।”
শানে নুযুল
স্মর্তব্য, “সূরায়ে ইখলাছ” নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলা হয়, একবার কিছু বেদ্বীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবার শরীফে এসে বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি যে আল্লাহ্ পাক-এর কথা বলছেন তাঁর পরিচয় কি? তাঁর পিতা-মাতা কে? তাঁর সন্তান কতজন, তিনি কোথায় অবস্থান করেন ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন করলো। তখনই আল্লাহ্ পাক “সূরা ইখলাছ” নাযিল করে তাঁর জাতের পরিচয় দিয়ে দেন। আমরা যদি উক্ত “সূরা ইখলাছের” সংক্ষিপ্ত তাফসীর বা ব্যখ্যা আলোচনা করি তবে আরো ভালরূপে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, মহান আল্লাহ্ পাক-এর জাতের অংশী হওয়া আদৌ সম্ভব নয়। নিম্নে সূরা ইখলাছের সংক্ষিপ্ত ব্যখ্যা তুলে ধরা হলো-
তাফসীর বা ব্যাখ্যা
মহান আল্লাহ্ পাক বলেন, হে রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (লোকদেরকে) বলুন,
ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺣﺪ .
সেই আল্লাহ্ পাক (যার সম্পর্কে তোমরা প্রশ্ন করেছ) এক ও একক। মূলতঃ একক হওয়ার গুণটি একমাত্র তাঁর জন্যই বিশেষভাবে নির্দিষ্ট। সৃষ্টি জগতের অন্য কেউই অন্য কিছুই এই গুণে গুণান্বিত হবার অধিকারী নয়।কেবল মাত্র তিনিই এক। তিনিই একক ও অনন্য। তাঁর দ্বিতীয় কেউই নেই। বিকল্প কিছুই নেই। তিনি একাই রব, মনিব ও প্রতিপালক। রব হওয়ার ব্যাপারে অন্য কেউই কিছুই তাঁর অংশিদার নয়। আর যিনি রব, একমাত্র তিনিই ইলাহ্-মাবুদ হতে পারেন। অন্য কারও বা কিছুরই ইলাহ্-মাবুদ হওয়ার অধিকার নেই। তাই ইলাহ্-মাবুদ হওয়ার ব্যাপারেও তিনি একক। এ ব্যাপারে কেউই তাঁর শরীক নেই, হতে পারে না। বিশ্ব লোকের তিনি একাই সৃষ্টিকর্তা, সষ্টির একাজে অন্য কেউই বা কিছুই তাঁর সাথে শরিক নেই। তাই তিনি একাই বিশ্ব জগতের মালিক, পরিচালক, বিধানদাতা, রিযিকদাতা, বিপদে সাহায্যকারী ও ফরিয়াদ শ্রবণকারী। এসব কাজেও তিনি একক। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি একা চিরন্তন, শাশ্বত, চিরস্থায়ী, চিরঞ্জীব ও সর্বজ্ঞ এবং তিনিই একা আল্লাহ্। তাঁর
পূর্বেও কোন আল্লাহ্ ছিল না এবং তাঁর পরেও কেউ আল্লাহ্ হবে না। তাঁর পূর্ব ও পর বলতে যখন কিছুই নেই,
তখন অন্য কারো আল্লাহ্ হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। তিনি একাই আল্লাহ্, তাঁর স্বজাতীয় বা সমতূল্য কেউ নেই।
তিনি শুধু ওয়াহেদ বা এক নয়, তিনি আহাদ তথা এককও। একের পর দুই হয়, তাই বহুত্তের ধারণা সতঃই
এসে যায়। কিন্তু একক হওয়ার কারণে বহুত্বের এক বিন্দু স্থানও সেখানে নেই। বহু বিচ্ছিন্ন ও স্বতন্ত্র অংশ মিলিত হয়ে আল্লাহ্ পাক-এর সত্ত্বা গড়ে উঠেনি। তাঁর জাতে সংযোজন ও বিয়োজন (যোগ ও বিয়োগ) কিছুই নেই। তিনি খন্ডে খন্ডে বা অংশে বিভক্ত হননা। তাঁর জাত হতে কিছুই বের হয় না, হতে পারে না। তাঁর জাত অবিভক্ত, অবিভাজ্য ও অবন্টনীয়। তাঁর শরীর নেই, আকার-আকৃতি নেই, তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কিছুই নেই। তাঁর জাতের মধ্যে অন্য কোন জিনিস স্থান পায়নি। তাঁর কোন বর্ণ বা রং নেই। তাঁর কোন দিক নেই। তিনি কোন স্থানে অবস্থিত নন। তিনি সময়ের আওতা হতেও মুক্ত। তাঁর জাতের কোন প্রকার পরিবর্তন নেই। মোটকথা বহুত্বের যাবতীয় ধরণ থেকে তিনি অতি উর্দ্ধে, অতি পবিত্র। সর্বদিক দিয়েই তিনি একক, অনন্য ও অদ্বিতীয়।
ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺼﻤﺪ .
আল্লাহ্ পাক কারো মুখাপেক্ষী নন। বরং সৃষ্টিলোকের সকলেই সবকিছুই সর্ব ব্যাপারে তাঁর মুখাপেক্ষী। তাঁর চেয়ে উচ্চতর কেউ নেই। তিনি সকল শ্রেষ্ঠ গুণাবলীর অধিকারী। তাঁর মধ্য হতে কোন জিনিস কখনও বের হয়নি এবং হয় না। তিনি পানাহার করেন না। সকল ব্যাপারে তাঁরই নিকট প্রার্থনা করা হয়। বিপদে সাহায্য তাঁর নিকট চাওয়া হয়। তাঁর উপর উপর কোন প্রকার বিপদ-আপদ আসেনা। তিনি যাবতীয় দোষত্রুটি হতে মুক্ত। তাঁর গুণে অন্য কেউ গুণান্বিত নয়। আপনইচ্ছা ও খুশি মত কাজ করেন। তাঁর কাজে পুনঃ বিবেচনা করার কেউ নেই বা আপত্তি তোলারও কেউ নেই। তিনি চিরস্থায়ী, শাশ্বত, অসীম। তিনিই আসল ও প্রকৃত ছামাদ, কারণ আয়াত শরীফে ﻟﻠﻪ ﺻﻤﺪ না বলে ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺼﻤﺪ বলা হয়েছে। সৃষ্টির কোন ব্যক্তি বা বস্তু কোন একদিকে ছামাদ হলেও সবদিক থেকে নয়। কিন্তু আল্লাহ্ পাক সর্বদিক থেকেই ছামাদ। সমস্ত সৃষ্টি জগত সর্বক্ষেত্রে তাঁর মুখাপেক্ষী। কিন্তু তিনি কোন ব্যপারেই কারো মুখাপেক্ষী নন। সকলের সব রকমের প্রয়োজন কেবল তিনিই পূরণ করেন এবং করতে পারেন। তিনি রিযিক দান করেন। গ্রহণ করেন না। তিনি অজর, অমর, অক্ষয়, চিরস্থায়ী ও শাশ্বত্ব, একক, অবিভাজ্য, অবন্টনীয়। বহু জিনিসের সংযোজনে তৈরী নন। সর্বাপেক্ষা বড় ও সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই তিনি কেবল ছামাদই নহেন। আচ্ছামাদও। অর্থাৎ ছামাদগুণে কেবল তাঁর জাতই গুণান্বিত। আচ্ছামাদ হওয়ার কারণে কেবল তিনিই একক, অনন্য ও অতুলনীয়। তাই তিনি মাবুদ হওয়ার একমাত্র অধিকারী।
ﻟﻢ ﻳﻠﺪ ﻭﻟﻢ ﻳﻮﻟﺪ .
না তাঁর কোন সন্তান আছে। না তিনি কারো সন্তান। তাই তাঁর জাতের অংশী হওয়াও সম্ভব নয়। কারণ
আল্লাহ্ পাক-এর জাতে পাক থেকে কিছুই বের হয়ে আসে নি এবং প্রবেশও করেনি।
ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻟﻪ ﻛﻔﻮﺍ ﺍﺣﺪ .
এবং কেউ কোন দিক থেকেই তাঁর সমতুল্য ও সমকক্ষ নয়।
অনত্র বলা হয়েছে, ﻟﻴﺲ ﻛﻤﺜﻠﻪ ﺷﺊ কিছুই তাঁর মত নয়। অর্থাৎ গোটা সৃষ্টি জগতে জাতের দিক থেকে, ক্ষমতা ও ইখতিয়ারে, গুণাবলী ও কার্যাবলীতে কেউই কিছু একবিন্দু পরিমাণও তাঁর সমমর্যাদাবান নয়, ছিল না, হতে পারে না এবং পারবেও না। যেহেতু আল্লাহ পাক সৃষ্টি জগতের কোন বস্তুর শ্রেণীভুক্ত নন এবং কোন বস্তুর সাথে তাঁর কোন প্রকার মিল বা সাদৃশ্যতাও নেই। তাই তিনি সকল প্রকার সৃষ্ট বস্তু তথা জাওহার ও জেছেম হতে এবং আরজ তথা জাওহার ও জিছিমের যাবতীয় বৈশিষ্ট ও গুণাবলী। যথা- রং, গন্ধ ইত্যাদি হতে সম্পূর্ণ পবিত্র ওমুক্ত।
-“সূরায়ে ইখলাছের” উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত তাফসীর থেকে এটাই প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ্ পাক-এর জাতে পাক অংশী হওয়া থেকে সম্পূর্ণই পবিত্র।
সুতরাং “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্ পাক-এর জাতের অংশ।” এ কথা বলা বা এরূপ আক্বীদা পোষণ করা সুস্পষ্ট কূফরী।
কাজেই জাতী নূরে বিশ্বাসীরা যে বলে থাকে “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু “নূরের তৈরীই” নন বরং তিনি মহান আল্লাহ্ পাক-এর “জাত” অর্থাৎ “জাতী নূরের তৈরি” আবার কেউ কেউ বলেন, মহান আল্লাহ্ পাক তাঁর হাবীবকে সৃষ্টি করার কোন উপকরণ না পেয়ে আপন ডান হাত দ্বারা বাম সিনার থেকে খামছী মেরে এক টুকরা “নূর” বের করেন এবং সে “নূর” দ্বারা তাঁর হাবীবকে সৃষ্টি করেন।” তাদের এ বক্তব্য কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের দলীল দ্বারা ভুল, জিহালতপূর্ণ, দলীলবিহীন ও কূফরীমূলক প্রমাণিত হলো। প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ্ পাক “নূর বা আলো” নন। বরং তিনি “নূর বা আলো” স্রষ্টা। তিনি উপাদান ব্যতীতই সবকিছু তৈরী ক রতে সক্ষম। তিনি দেহ বা আকার- আকৃতি বিশিষ্ট নন এবং তাঁর জাতে পাকের কোনই অংশী নেই। এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের
ইমাম-মুজতাহিদ সকলের আক্বীদা। এর বিপরিত আক্বীদা পোষণকারীরা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত থেকে খারিজ।
Posted in
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা পোষন করার তাওফিক দান করুন।
No comments:
Post a Comment