ইলমে-ফিকাহ
পরিচিতি-ও-প্রয়োজনীয়তা
ইলমুল ফিকহ’-উনার আভিধানিক অর্থ
ইলম শব্দটি একবচন, বহুবচনে উলূম বাবে সামিয়া-.এর মাছদার অর্থ-জ্ঞান, শাস্ত্র, তত্ত্ব ইত্যাদি। ফিক্হ শব্দটিও বাবে সামিয়া -এর মাছদার। শাব্দিক অর্থ- ছহীহ বুঝ, বিচক্ষণতা, সূক্ষদর্শিতা, গভীর জ্ঞান ও উন্মুক্ত করা ইত্যাদি। সুতরাং একত্রে ইলমুল ফিক্হ অর্থ ফিকাহ শাস্ত্র। “দূররুল মুখতার গ্রন্থে রয়েছে- “ফিক্হ বলা হয় কোনো জিনিস সম্পর্কে জানা। সাইয়্যিদ মুফতী আমীমুল ইহসান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন “বক্তব্য হতে বক্তার উদ্দেশ্য অনুধাবন করাকে ফিক্হ বলা হয়।
পারিভাষিক সংজ্ঞা:
মুজাদ্দিদে যামান, আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ হতে ছহীহ্ বুঝ বা (বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা প্রাপ্ত) ইল্মকে ফিক্হ বলা হয়। অর্থাৎ বাস্তব জীবনের কর্মপন্থা সংক্রান্ত শরয়ী বিধানাবলী দলীল প্রমাণের ভিত্তিতে অবগত হওয়ার নাম ফিকহ। এক কথায় ইসলামী শরীয়তকেই ‘ফিক্হ’ বলা হয়।
আলোচ্য বিষয়
মানব জীবনের মাথার তালু থেকে পায়ের তলা, হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত সকল স্তর তথা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আধ্যাত্মিক সর্বস্তরের যাবতীয় কর্মকা- সম্পর্কে ইসলামী বিধানসমূহ আলোচনা এবং এসব বিধানের দলীল প্রমাণ ও যুক্তিসমূহ উপস্থাপন করাই ‘ফিক্হ শাস্ত্রের’ আলোচ্য বিষয়।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
মানব জীবনের প্রতিটি স্তরে ও কর্মকা-ে মহান আল্লাহ পাক ও উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রদর্শিত বিধানসমূহ অবগত হয়ে সে মতে আমল করে হক্বকুল্লাহ ও হক্বকুল ইবাদ যথাযথ আদায় করে মহান আল্লাহ পাক ও উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীকী সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করাই ইলমুল ফিক্হ উনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
উৎপত্তি
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওহী মুবারক ছাড়া নিজ থেকে কোনো কিছুই বলেন না।”
অর্থাৎ, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিদায়ের পর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার পরিপূর্ণ অনুসরণ করতেন। নতুন কোনো সমস্যা দেখা দিলে পরামর্শের ভিত্তিতে ফায়সালা করতেন।
মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার প্রত্যেক ছাহাবায়ে কিরাম তারকা সাদৃশ্য, তোমরা যে কাউকে অনুসরণ করবে, হিদায়েত পেয়ে যাবে।”
অর্থাৎ প্রত্যেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ পৃথক পৃথক মাযহাবের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। অর্থাৎ প্রত্যেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা প্রত্যেকেই এক একটা মাযহাব।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম যুগের পরবর্তীতে আরো ব্যাপকভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোকরশ্মি দিক দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় সমস্ত পৃথিবীর দেশ ও জাতি মুসলমানদের সংস্পর্শে আসে। ফলে মানব জীবনের বহু নিত্য-নতুন সমস্যার উদ্ভব হতে থাকে। যেহেতু ইসলামী জীবন ব্যবস্থার হুকুম-আহকাম ও নিয়ম কানুনসমূহ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার নানা স্থানে বিস্তৃত পরিসর জুড়ে বর্ণিত রয়েছে। তাই উদ্ভূত সমস্যার সমাধান পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ খুঁজে বের করা বহু সময় সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য বটে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সাধারণের পক্ষে তা সহজ সাধ্য হয়ে উঠে না। অতএব, সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনাকে অল্পায়াসে সমস্যার সঠিক সমাধান করার জন্য একটি ধারাবাহিক শ্রেণীবদ্ধ ফিক্হ শাস্ত্রের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছিলো। মহান আল্লাহ পাক ও উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অশেষ দয়া ও ইহসানে উক্ত অভাব চিরতরে দূরীভূত হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফসমূহের শানে নযূল, উৎস, পরিবেশ ও পরস্পর সম্পর্কে, নাসেখ মানসুখ ইত্যাদি সম্বন্ধে পূর্ণ ইলম না থাকলে ইসলামী শরীয়ত উনার যে কোনো বিষয় সমাধান দেয়া কোনোক্রমেই শুদ্ধ হবে না। আর সম্মানিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের ইমাম তথা ফকীহগণের এ বিষয় পরিপূর্ণ ইলম ছিল। উনারা এসব বিষয় পবিত্র কুরআন শরীফ ও সমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ পূর্ণাঙ্গভাবে তাহক্বীক করে ফিক্হ শাস্ত্র সম্পাদন করেন (মাযহাব নির্ধারণ করেন)। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রাথমিক যুগে ফিক্হ শাস্ত্রের কোনো শাস্ত্র অস্তিত্ব ছিল না। তখন পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সঙ্গে একীভূত ছিল। হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুতে ইলমুল ফিকাহ একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুগভীর ইলম, প্রজ্ঞা ও ইলমে লাদুন্নির দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফ ও সমস্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ফিক্হ শাস্ত্র সংকলন করেন। হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ১০০০ ছাত্রেরও বেশি ছাত্রদের নিয়ে ফিক্হ শাস্ত্র সম্পাদনায় কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এজন্য তিনি ছাত্রদের মধ্যে যুগশ্রেষ্ঠ চল্লিশজন ফিক্হ তত্ত্ববিদকে নিয়ে একটি সম্পাদনা পরিষদ গঠন করেন, যাদের প্রত্যেকেই হক্কানী আলিম ও মুজতাহিদগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। উনাদের মধ্যে হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম হযরত মুহম্মদ রহমতল্লাহি আলাইহি ও ইমাম যুফার রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখযোগ্য। এ পরিষদের মাসয়ালা রচনার পদ্ধতি এরূপ ছিল, প্রথমত, মাসয়ালার সমাধান পবিত্র কুরআন শরীফে অনুসন্ধান করা হত এবং প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সূত্রে সমাধান পেলেই তা লিপিবদ্ধ করা হতো। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিভিন্নমুখী উক্তি পরিলক্ষিত হলে তার শানে নুযুল, নাসেখ, মানসুখ, পরিবেশ ও উৎস সমন্ধে বিস্তারিত আলোচনার পর যা সঠিক বলে সকলে বিবেচনা করতেন, ঐ সমাধানই লিপিবদ্ধ করতেন। বিতর্কমূলক মাসয়ালাসমূহে হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শেষ জীবন মুবারকের পবিত্র হাদীছ শরীফকে গ্রহণ করতেন। পবিত্র সুন্নাহ শরীফ দ্বারা সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত না হতে পারলে ইজমার প্রতি দৃষ্টি দিতেন। সর্বশেষে ক্বিয়াস ও ইসতিহসান দ্বারা মীমাংসা করতেন। যেহেতু ফিক্হ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মূল বুনিয়াদ বা উৎস চারটি যথাঃ
১। পবিত্র কুরআন শরীফ
২। পবিত্র সুন্নাহ শরীফ
৩। পবিত্র ইজমায়ে উম্মাহ
৪। পবিত্র ছহীহ্ ক্বিয়াস।
হযরত ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রত্যেকটি মাসয়ালা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পর্যালোচনার পর লিপিবদ্ধ করতেন। সুদীর্ঘ ২২ বছর এরূপ অক্লান্ত কোশেশের পর ১২৪ হিজরীতে সম্পাদনের কাজ সমাপ্ত করেন এবং পাঁচ লক্ষ মাসয়ালা সন্নিবেশিত হয়। যা ফিকহে হানীফীয়ামে সর্বত্র প্রসিদ্ধি লাভ করে।
১। পবিত্র কুরআন শরীফ
২। পবিত্র সুন্নাহ শরীফ
৩। পবিত্র ইজমায়ে উম্মাহ
৪। পবিত্র ছহীহ্ ক্বিয়াস।
হযরত ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রত্যেকটি মাসয়ালা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পর্যালোচনার পর লিপিবদ্ধ করতেন। সুদীর্ঘ ২২ বছর এরূপ অক্লান্ত কোশেশের পর ১২৪ হিজরীতে সম্পাদনের কাজ সমাপ্ত করেন এবং পাঁচ লক্ষ মাসয়ালা সন্নিবেশিত হয়। যা ফিকহে হানীফীয়ামে সর্বত্র প্রসিদ্ধি লাভ করে।
কতিপয় পরিভাষা
১। আল ইমামুল আ’যম : ইমামুল আ’যম বলতে হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও বর্তমান শতকের মুজাদ্দিদ ও ইমাম, খলীফাতুল্লাহ খলিফাতু রাসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, মুহইস্ সুন্নাহ, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে বুঝায়।
২। আছ্ ছদরুল আউয়াল : হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণকে ‘সদরুল আউয়াল’ বলা হয়।
৩। শাইখাইন : হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘শাইখাইন’ বলা হয়।
৪। ত্বরফাইন : হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘ত্বরফাইন’ বলা হয়।
৫. ছহিবাইন : হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহ আলাইহিকে একত্রে ছহিবাইন বলা হয়।
৬। মুতাক্বাদ্দিমীন : হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফিক্হ শাস্ত্র সম্পাদনার জন্য যাদেরকে নিয়ে সম্পাদনা বোর্ড গঠন করেছিলেন উনাদের ও উনাদের সমসাময়িক ফক্বীহগণকে ‘মুতাক্বদ্দীমিন’ বলা হয়। যেমন ইমাম আবূ ইউসুফ, মুহম্মদ ও যুফার রহমতুল্লাহি আলাইহিম প্রমুখগণ।
৭। আকাবিরুল মুতায়াখখিরীন: মুতাক্বাদ্দিমীনের পরবর্তী যুগের ইমামগণ তথা হযরত আবূ বকর, খাচ্ছাফ, কারখী, তাহাবী, হাল্ওয়ায়ী, সারাখসী, কাযীখান রহমতুল্লাহি আলাইহিম ও উনাদের সমসাময়িক ফক্বীহগণকে ‘আল আকাবিরুল মুতায়াখ্খিরীন’ বলা হয়।
৮। মুতায়াখখিরীন : আকাবিরুল মুতায়াখখীরিন এর পরবর্তী যুগের ফিক্হবিদগণকে মুতায়াখ্খিরীন বলা হয়।
৯। মাযাহিবুল আরবায়া : মাযহাবে আরবাআ বলতে হানাফী, মালেকী শাফিয়ী, ও হাম্বলী মাযহাবকে বোঝায়।
১০। আল আইম্মাতুল আরবায়া : হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘আল আইম্মাতুল আরবায়া’ বলা হয়।
১১। আল আইম্মাতুছ ছালাছাহ : আল আইম্মাতুছ্ ছালাছাহ বলতে হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ও হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে বোঝায়।
১২। আল আইম্মাতুনাছ ছালাছাহ : হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘আল আইম্মাতুনাছ ছালাছাহ’ বলা হয়।
২। আছ্ ছদরুল আউয়াল : হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণকে ‘সদরুল আউয়াল’ বলা হয়।
৩। শাইখাইন : হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘শাইখাইন’ বলা হয়।
৪। ত্বরফাইন : হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘ত্বরফাইন’ বলা হয়।
৫. ছহিবাইন : হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহ আলাইহিকে একত্রে ছহিবাইন বলা হয়।
৬। মুতাক্বাদ্দিমীন : হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফিক্হ শাস্ত্র সম্পাদনার জন্য যাদেরকে নিয়ে সম্পাদনা বোর্ড গঠন করেছিলেন উনাদের ও উনাদের সমসাময়িক ফক্বীহগণকে ‘মুতাক্বদ্দীমিন’ বলা হয়। যেমন ইমাম আবূ ইউসুফ, মুহম্মদ ও যুফার রহমতুল্লাহি আলাইহিম প্রমুখগণ।
৭। আকাবিরুল মুতায়াখখিরীন: মুতাক্বাদ্দিমীনের পরবর্তী যুগের ইমামগণ তথা হযরত আবূ বকর, খাচ্ছাফ, কারখী, তাহাবী, হাল্ওয়ায়ী, সারাখসী, কাযীখান রহমতুল্লাহি আলাইহিম ও উনাদের সমসাময়িক ফক্বীহগণকে ‘আল আকাবিরুল মুতায়াখ্খিরীন’ বলা হয়।
৮। মুতায়াখখিরীন : আকাবিরুল মুতায়াখখীরিন এর পরবর্তী যুগের ফিক্হবিদগণকে মুতায়াখ্খিরীন বলা হয়।
৯। মাযাহিবুল আরবায়া : মাযহাবে আরবাআ বলতে হানাফী, মালেকী শাফিয়ী, ও হাম্বলী মাযহাবকে বোঝায়।
১০। আল আইম্মাতুল আরবায়া : হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘আল আইম্মাতুল আরবায়া’ বলা হয়।
১১। আল আইম্মাতুছ ছালাছাহ : আল আইম্মাতুছ্ ছালাছাহ বলতে হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ও হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে বোঝায়।
১২। আল আইম্মাতুনাছ ছালাছাহ : হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকে একত্রে ‘আল আইম্মাতুনাছ ছালাছাহ’ বলা হয়।
No comments:
Post a Comment