আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ্। বাংলাদেশ সম্পর্কে জানুন। এখানে রয়েছে ইসলামী বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাণ্ডার যা প্রতিটি মুসলমানের জন্য জানা অত্যাবশ্যক।***
যে কোন রোগের চিকিৎসা সেবা সহ অনলাইনে ফ্রি ডাক্তারের সাথে পরামর্শের সুযোগ ***
ডাঃ আহমদ ইমতিয়াজ ডি.এইচ.এম.এস, বি.এইচ.এম.সি (ঢাকা) মোবাইল - 01914440430 ই-মেইলঃ drahmadimtiaj@gmail.com ***

আযান, আযানের উৎপত্তি ও ইতিহাস

আযানঃ
আযান” (اذان) আরবী শব্দটিএর লোগাতী বা আভিধানিক অর্থ হলো- সংবাদ দেয়া, আহবান করা, ডাকা ইত্যাদি। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামে পাকে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে এই বলে নির্দেশ দিয়েছেন যে,
اذن فى الناس بالحج.
অর্থ:- “হে ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম! আপনি লোকদেরকে হজ্জের জন্য আহবান করুন।
আরআযানেরশরয়ী অর্থ হলো- নির্ধারিত ওয়াক্ত সমূহে নির্ধারিত নামাযের জন্য শরীয়ত নির্ধারিত শব্দ সমূহ দ্বারা সংবাদ দেয়া, আহবান করা বা ডাকা।

আযানের উৎপত্তি ইতিহাসঃ
ইসলামের পাঁচটি রোকন বা ভিত্তির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন রোকন বা ভিত্তি হচ্ছে নামায। আর ইসলামী শরীয়ত প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমান নর-নারীর জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরযে আইন করেছে।

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

عن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بنى الاسلام على خمس سهادة ان لا اله الا الله وان محمدا عبده ورسوله- اقام الصلوة وايناء الزكوة والحج وصوم رمضان.

অর্থ:- হযরত ইবনে ওমর আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি- () সাক্ষী দেয়া যে, আল্লাহ পাক ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। () নামায কায়িম করা, () যাকাত আদায় করা, () হজ্জ পালন করা, () রমাদ্বান শরীফের রোযা রাখা।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফাতহুল বরী, ওমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী, তাইসীরুল ক্বারী, শরহে নববী মেরকাত, লুময়াত আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী তালীকুছ ছবীহ, মুযাহেরে হক্ব)

অতএব কালিমা বা ঈমানের পর নামাযের গুরুত্বই সর্বাধিক।
হানাফী মাযহাব মুতাবেক পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামায়াতের সহিত আদয় করা সুন্নতে মুয়াক্তাদাহ, করীবাতুম মিনাল ওয়াজিব বা ওয়াজিবের নিকটবর্তী।

উল্লেখ্য, মুসলমানগণ যাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে আদায় করতে পারে, সেজন্যে আযানের বিধান দেয়া হয়েছে। হানাফী মাযহাব মুতাববেক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য দৈনিক পাঁচ বার প্রত্যেক মসজিদে আযান দেয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, তরক করলে ওয়াজিব তরকের গুণাহ হবে
স্মর্তব্য যে, পবিত্র মক্কা শরীফে আযান ব্যতীতই নামায আদায় করা হতো, পবিত্র মদীনা শরীফে আসর পর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের সঙ্গে পরামর্শ করে বললেন যে, নামাযের জন্য লোকদেরকে সংবাদ দেয়ার বা আহবান করার জন্য একটি উপায় বা পদ্ধতি উদ্ভাবন করা প্রয়োজন। জবাবে উনাদের মধ্য হতে কেউ বললেন ঘণ্টা বাজানো হোক। আবার কেউ বললেন, শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হোক! আবার কেউ বললেন, শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হোক! আবার কেউ কেউ বললেন, আগুণ জ্বালানো হোক! কিন্তু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের অনেকেই সকল পদ্ধতির প্রতিবাদ জানালেন বা বিপক্ষে মত পেশ করলেন। উনাদের মতে ঘণ্টা বাজানো খ্রিস্টানদের আমল এবং শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া আগুণ জ্বালানো ইহুদী মজুসী বা অগ্নি উপাসকদের আমলের সাদৃশ্য।
তাই নামাযের জন্য আহবান করার উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো সর্বসম্মতিক্রমেই পরিত্যাজ্য হলো। পরবর্তীতে কতিপয় ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বর্তমান আযানের সকল বাক্যসমূহ স্বপ্নে দেখেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বপ্নের কথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে পেশ করেন। তখন আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আযানকেই লোকদেরকে নামাযের জন্য আহবান করার লক্ষ্যে গ্রহণ করেন। আর মূলত: তখন থেকেই নামাযের জন্য আযান দেয়ার পদ্ধতি জারী করা হয়।

আযানের উৎপত্তি প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফের কিতাব সমূহে বহু হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। 
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে যে,

عن انس بن مالك قال- ذكروا النار والناقوس فذكروا البهود والنصرى فامر بلال ان يتفغ الاذان.

অর্থ:- “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, (নামাযের সংবাদ দেয়ার জন্য) হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আয়ালা আনহুমগণ আগুণ শিঙ্গার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু কেউ কেউ বলেন, এটি ইহুদী নাছারাদের প্রথা। তখন হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জোড়া জোড়া আযান দেয়ার বা আযানের প্রত্যেক বাক্য দুইবার করে বলার নির্দেশ দেয়া হলো।
(
বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ফাতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সাবী, তাইসীরুল ক্বারী, শরহে নববী, মেরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তালীকুছ ছবীহ, মোযাহেরে হক্ব, মিরআতুল মানাযীহ)

হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে যে,

عن ابن عمر قال كان المسلمون حين فدموا المدينة يجتمعون فيتحينون للصلوة ونيس ينادى بها احد فتكلموا يوما فى ذالك فقال بعضهم اتخذوا مثل نافوس النصرى وقال بعضهم قرنا مثل ققرن اليهود فقال عمر اولا تبعثون رجلا ينادى بالصلوة فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم يا بلال قم فناد بالصلوة.

অর্থ:- হযরত ইবনে উমর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানগণ যখন মদীনা শরীফে আগমণ করেন, তখন তারা অনুমান করে নামাযের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করে নেন এবং সে সময় সকলেই নামাযের জন্য একত্রিত হতেন। নামাযের জন্য কেউ (আলাদাভাবে) আহবান করতেন না। একদিন উনারা (নামাযের জন্য সংবাদ দেয়ার পদ্ধতি উদ্ভাবন করার।) ব্যাপারে আলোচনায় বসলেন। কেউ বললেন নাছারাদের ন্যায় একটি ঘণ্টা বাজানো হোক, আবার কেউ বললেন ইহুদীদের ন্যায় শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হোক। তখন হযরত ্উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, তোমরা কি এমন একজন লোকে পাঠাতে পার না? যে নামাযের জন্য লোকদেরকে আহবান করবে। অত:পর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, হে বেলাল উঠ এবং নামাযের জন্য আহবান করো।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফাতহুল বরী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী, তাইসীরুল ক্বারী, শরহে নববী, মেরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তালীকুছ ছবীহ, মুযাহেরে হক্ব, মিরআতুল মানাযীহ) 

নিম্নোক্ত হাদীছ শরীফ- আযানের উৎপত্তি ইতিহাস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত সুস্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে।

হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে যে,

عن عبد الله بن زبر بن عبد ريه قال الماامر رسول الله صلى الله عليه وسلم الناقوس يعمل نيضرب به للناس لجمع الصلوة طاف بى وانانا نم رجل يحمز تاقوسا ف يده غقلب يا عبد الله انبيع الناقوس قال وما تصنع به قلت ندعو به الى الصلوة فقال افلا ادلك على ماهو خير من ذالك فقلت له بلى قال فقال تقول الله اكبر الى اخره وكذا الاقامة فلما اصحت انبت رسول الله صلى الله عليه وسلم فا خبرته بما رايت فقال انها لروبه حق ان شاء الله تعالى فقم مع بلال فالق عليه مارايت فليوذن به فاانه اندى صوتا منك فقمت مع بلال فجعلت القيه عليه ويؤذن به قال فسمع بذا لك عمر بن الخطاب وهوفى بيته فخرح يجر ردائه يقول يا رسول الله والذى بعثلك بالحق رأيت مثل اورى فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم فلله الحق.

অর্থ:- “হযরত আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ বিন আবদে রাব্বিহী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যকন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিহ ওয়া সাল্লাম তিনি লোকদেরকে নামাযের জন্য একত্রিত হওয়ার লক্ষ্যে (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সঙ্গে) ঘণ্টা বাজানোর ব্যাপারে পরামর্শ করছিলেন, তখন আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, নিজ হাতে ঘণ্টা ধারণকৃত এক ব্যক্তি আমার নিকট উপস্থিত হয়েছেন। অত:পর আমি তাকে বললাম- হে আল্লাহর বান্দা। ঘণ্টাটি বিক্রয় করবেন কি? সে বললো, এটা দিয়ে আপনি কি করবেন? আমি বললাম এটা দ্বারা আমরা নামাযের জন্য আহবান করবো। সে বললো এটা হতে যা উত্তম তা কি আপনাকে বলে দিব। আমি বললাম- হাঁ, (অবশ্যই বলে দিবেন) তখন তিনিআল্লাহ আকবারহতে শুরু করেআযানেরশেষ পর্যন্ত সমস্ত শব্দ বা বাক্যগুলি বললেন। অনুরূপ এক্বামতেরও।
অত:পপর যখন আমি ভোরবেলায় গুম থেকে উঠলাম, (ঘুম থেকে উঠে) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে পৌঁছলাম। এবং উনার নিকট স্বপ্নের ব্যাপারটি বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ পাক তোমার মুবারক করুন, নিশ্চয়ই এটা সত্য স্বপ্ন! তুমি যা দেখেছ, তা বেলাল উনার নিকট বর্ণনা কর। হযরত বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার যেন সে শব্দ বা বাক্যগুলো দ্বারা আযান দেয়। কেননা বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তোমার থেকে অধিক উচ্চ স্বরধারী। সুতরাং আমি হযরত বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট গেলাম এবং উনাকে আযানের বাক্যগুলো বাতলিয়ে দিলাম, তিনি তা দ্বারা আযান দিতে লাগলেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবদে রাব্বিহী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উক্ত আযান শুনলেন, তখন তিনি উনার ঘরে অবস্থান করছিলেন, তিনি নিজ চাঁদর টানতে টানতে বের হয়ে আসলেন এবং বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনাকে যিনি সত্য (দ্বীন) সহকারে পাঠিয়েছেন উনার কসম! নিশ্চয়ই আমিও হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবদে রাব্বিহী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ন্যায় (আযানের উক্ত বাক্যগুলো) স্বপ্নে দেখেছি। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার জন্যই সকল তারীফ বা প্রশংসা (আবু দাউদ শরীফ, দারেমী, ইবনে মাযাহ, মিশকাত, বযলুল মাজহুদ, মেরকাত, লুময়াত, শয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তালীকুছ ছবীহ, মুযাহেরে হক্ব মিরআতুল মানাজীহ)

হাদীছ শরীফের উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, নামাযের জন্য আহবান করারআযানের পদ্ধতি শুরু হয় মূলত: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা শরীফে হিজযরত করার পর। আর তা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে স্বপ্নের মাধ্যমে অবহিত করা হয়। অবশ্য সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আযানের পদ্ধতি সম্পর্কে পূর্ব থেকেই অবহিত ছিলেন।
হাদীছ শরীফে বর্ণনায় উল্লেক আছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজ শরীফে কোন এক ফেরেশতার মুখে আযানের উক্ত শব্দগুলো শুনেছিলেন।(দায়লামী শরীফ)

স্মর্তব্য যে, আযানের ইতিহাস উৎপত্তি সম্পর্কিত উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা একটি বিষয় স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে,
কোন অবস্থাতেই ঈমান আমলে ইহুদী-নাছারা বা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথে সাদৃশ্য রাখা তাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা যাবে না। কারণ আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদী-নাছারা তথা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথে সাদৃশ্য হবে বিধায়, নামাযের জন্য আহবান করার লক্ষ্যে ঘণ্টা বাজানো শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার পদ্ধতিকে সমপূর্ণরূপে পরিত্যাগ করার নির্দেশ দেন।
কেননা, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

من تشبه بقوم فهو منهم.

অর্থ:- “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল বা সাদ্যশ্য রাখবে, সে ব্যক্তি তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।” (মসনদে আহমদ)

কাজেই হাদীছ শরীফের আলোকে প্রমাণিত হলো যেইহুদী-নাছারা বা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যদি খালিছ তওবা না করে, তবে তাদের হাশর-নাশর অবস্তান নিশ্চিতরূপেই ইহুদী-নাছারা, হিন্দু-বৌদ্ধ, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সাথেই হবে। তাই ধরণের আক্বীদা আমল থেকে খালিছ তওবা করা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।

আরো উল্লেখ্য যে, নামাযের জন্য প্রত্যেক মসজিদে আযান দেয়া শুধু সুন্নতে মুয়াক্কাদাই নয়। বরং আযান (শিয়ারুল ইসলাম) ইসলামের একটি নিদর্শন।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যখন কোন ক্বওমের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতেন, তখন যদি তাদের মধ্যে আযান শুনতে পেতেন তবে অভিযান বন্ধ করে দিতেন এবং বলতেন, উনারা মুসলমান! আর একারণেই ফক্বীহগণ, সম্মিলিতভাবে আযান ত্যাগকারীদের বিরুদ্ধে জ্বিহাদ করা জায়িয বলেছেন।

অতএব, যারা আযান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রু করবে, আযানকে অস্বীকার করবে এবং আযান শুনলে যাদের কান জ্বালাপোড়া করে, তাদেরকে মুসলমান বলা যায় না। দের সম্পর্কে কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

واذا فاديتم الى الصلوة اتخذوها هزواولعبا.

অর্থ:- “যখন তোমরা নামাযের দিকে আহবান করা বা আযান দাও, তখন তারা (কাফির মুশরেকরা, উক্ত আযান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে এবং আযানকে খেলা-বলার পাত্র মনে করে।
নামাজের উদ্দেশ্যে আহ্বান করার আযানের পদ্ধতি মদীনা শরীফেই উৎপত্তি লাভ করে। আর আযান শুধু সুন্নতে মুয়াক্কাদাই নয়, বরংশেয়ারুল ইসলামবা ইসলামের একটি বিশেষ নিদর্শন। যারা আযান নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রু করে, আযানকে অস্বীকার করে তাদেরকে শক্ত হস্তে প্রতিহত করা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব।  

No comments:

Post a Comment