আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ্। বাংলাদেশ সম্পর্কে জানুন। এখানে রয়েছে ইসলামী বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাণ্ডার যা প্রতিটি মুসলমানের জন্য জানা অত্যাবশ্যক।***
যে কোন রোগের চিকিৎসা সেবা সহ অনলাইনে ফ্রি ডাক্তারের সাথে পরামর্শের সুযোগ ***
ডাঃ আহমদ ইমতিয়াজ ডি.এইচ.এম.এস, বি.এইচ.এম.সি (ঢাকা) মোবাইল - 01914440430 ই-মেইলঃ drahmadimtiaj@gmail.com ***

ছদাকাতুল ফিতর

ছদাকাতুল ফিতর
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ছদকাতুল ফিতর- এক সা’ গম বা আটা দুই ব্যক্তির পক্ষ থেকে আদায় করতে হবে। অর্থাৎ একজনের জন্য অর্ধ সা’।”

হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে,
عن عبد الله بن ثعلبة او ثعلبة بن عبد الله بن ابى صعير عن ابيه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صاع من بر ا و قمح عن كل اثنين صغير او كبير حر او عبد ذكر او انثى
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সা’লাবা অথবা সা’লাবা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আবু সুআইর উনার পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, এক সা’ গম বা আটা দু’ব্যক্তির পক্ষ থেকে আদায় করতে হবে- ছোট হোক বা বড় হোক, আযাদ হোক বা গোলাম হোক এবং পুরুষ হোক বা মহিলা হোক। (আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
আর অর্ধ সা’ হচ্ছে ১ সের সাড়ে ১২ ছটাক বা ১৬৫৭ গ্রাম। এ বছর ১৪৩৮ হিজরী, ঢাকা শহরে আটা ৩২ টাকা কেজি হিসেবে ছদাকাতুল ফিতর হলো প্রায় ৫৩ টাকা। এর কম দেয়া যাবে না। তবে ইচ্ছা করলে বেশি দিতে পারবে।(ভাল মানের প্যাকেট কৃত আটার মূল্য অনুযায়ী হিসেব করতে হবে। কমদামের পোকা মিশ্রিত আটার মূল্য হিসেবে ছতাকাতুল ফিতর দিলে কশ্মিণকালেও তা আদায় হবে না।
ফতওয়ায়ে আলমগীরী, ক্বাযীখান, বাহরুর রায়িক, হিদায়া, আইনুল হিদায়া ইত্যাদি সুপ্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবে উল্লেখ রয়েছে সম্মানিত হানাফী মাযহাবে শুধুমাত্র গম তথা আটার মূল্যে ছদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। অন্যকিছু দিয়ে ছদকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে না। 
দেশের প্রধান খাদ্য দিয়ে ছদকাতুল ফিতর আদায় করা; এটা মূলত বাতিল ফিরক্বা লা-মাযহাবীদের ফতওয়া।

ছদাক্বাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়া
সম্মানিত হানাফী মাযহাব মতে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ছুব্হে ছাদিকের সময় নিসাব পরিমাণ অর্থ সম্পদ যাদের কাছে থাকবে তাদের উপর ছদাক্বাতুল ফিতর ওয়াজিব।

ছাহিবে নিসাব এর পরিমান 
সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা অথবা এর সমপরিমাণ মূল্য অথবা স্বর্ণ, রূপা ও নগদ অর্থ মিলিয়ে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার মূল্যের সমপরিমান অর্থ সম্পদই ছাহিবে নিসাব। 
অর্থাৎ রুপার ভরি ১,০০০/- টাকা হলে ছাহিবে নিসাব এর পরিমান হবে ৫২,৫০০/- টাকা।
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানাতে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ ও সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার দাম সমান ছিল। কিন্ত বর্তমানে দামের অনেক পার্থক্য হয়ে গিয়েছে। সন্মানিত হানাফী মাযহাবের ফতওয়া অনুযায়ী যেটির দাম কম সে অনুযায়ী মূল্য হিসেব করে ছাহিবে নিসাব ধার্য করা হয়েছে গরীবের যাতে উপকার হয়।
তবে যাকাত এবং ছদাকাতুল ফিতরের নিসাবের কিছু পার্থক্য রয়েছে। ছদাকাতুল ফিতরের নিসাবের জন্য অতিরিক্ত আসবাবপত্র পোষাক পরিচ্ছদ সহ গৃহস্থালী দ্রব্য সামগ্রীও অন্তর্ভূক্ত হবে যা যাকাতের নিসাবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ পবিত্র রমাদ্বান শরীফের শুরুতেই ছদাকাতুল ফিতর আদায় করে দিতেন। ফলে অসচ্ছল ছাহাবীগণের পক্ষে পবিত্র্র রমাদ্বান শরীফে সাহরী ও ইফতারের ব্যবস্থা হয়ে যেত। তাছাড়া পবিত্র রমাদ্বান শরীফে ছদাকাতুল ফিতর আদায়ে কমপক্ষে সত্তর গুণ ফজিলত তো রয়েছেই।
রোযাদারের আমল সমূহ আসমান ও যমিনের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। ছদাকাতুল ফিতর আদায়ে, মহান আল্লাহ পাক ঐ সকল আমলের ক্রুটি বিচ্যুতি সমূহ ক্ষমা করে তা কবুল করে থাকেন।সুবহানাল্লাহ।
হানাফী মাযহাবের মহাসন্মানিত ইমাম, ইমামে আযম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি এ কারণেই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ছুব্হে ছাদিকের সময় সদ্য ভূমিষ্ট শিশু সহ সকল সচ্ছল ব্যক্তিকে ছদকাতুল ফিতর আদায় করার জন্য বিশেষ তাগিদ করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে সঠিক ভাবে ছদাকাতুল ফিতর আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment